ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন সিইসি

‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’র জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে রেহাই নিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2016, 04:53 PM
Updated : 4 Dec 2016, 04:53 PM

তার সঙ্গী আরও চার নির্বাচন কমিশনার ও এক জ‌্যেষ্ঠ সহকারী সচিবও রোববার বিচারপতি এম মোয়াজ্জেম হোসেন ও বিচারপতি মোহাম্মদ বদরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চে ক্ষমা চাইলে তাদের অব‌্যাহতি দিয়ে এই সংক্রান্ত রুলের নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়।

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলামের আবেদনে এই রুল দিয়েছিল হাই কোর্ট।  

গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ওই ইউনিয়নের ৪ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে ৭ এপ্রিল ভোট বাতিল বা পুনঃনির্বাচন চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছিলেন তিনি।

এরপর ২৩ এপ্রিল ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মিজানুর রহমান এক চিঠিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহিদুলকে জানান, স্থানীয় সরকার (ইউপি) আইন ও বিধি অনুযায়ী নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দরখাস্ত পেশের মাধ্যমে প্রতিকার পেতে পারেন বলে ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

এরপর জাহিদুল ইসলাম ২২ মে নির্বাচন কমিশনে আরেকটি আবেদন করেন। এ আবেদনে ৪ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রে পুনঃনির্বাচনের দাবি করা হয়।

নির্বাচন কমিশন থেকে এ আবেদনের কোনো সাড়া না পেয়ে সিইসিসহ ছয়জনকে বিবাদী করে ১৫ জুন হাই কোর্টে যান জাহিদুল।

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ (ফাইল ছবি)

তার আবেদনের শুনানি নিয়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং আবেদন নিষ্পত্তিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে ১৬ জুন রুল জারি করে আদালত।

আদেশের কপি পাওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে অন্তর্বতর্তীকালীন নির্দেশও দিয়েছিল আদালত।

হাই কোর্টের আদেশের অনুলিপি ইসি সচিবালয় ৩০ জুন ও আইন শাখা ১০ জুলাই পেলেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় জাহিদুল সম্পূরক আবেদন করেন।

তার আবেদনের পর ৭ অগাস্ট হাই কোর্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে রুল জারি করে এবং ১৪ নভেম্বরের মধ্যে নিজে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেয়।

একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনে করা জাহিদুলের আবেদন তদন্ত করতেও বলা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসি সচিবালয়ের সংস্থাপন শাখার একজন উপসচিবকে দিয়ে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে ২৭ অক্টোবর কমিশনে উপস্থাপন করে।

এ রুল জারি পর ১৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের পক্ষে লড়তে আইনজীবী ইয়াসীন খান আদালতের অনুমতি নেন। এরপর ছয়জন হাই কোর্টের হলফনামা শাখায় এসে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন। 

ইসির আইনজীবী ই‌য়াসীন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জাহিদুলকে ২৩ মে ও ১৮ জুলাই দেওয়া চিঠি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার আবেদনের তদন্ত করা হয়েছে। সেখানে অনিয়ম পাওয়া গেছে।

“এখন এসব বিষয়ে আদালতে হলফনামা দেব। তারপর মূল রিট নিষ্পত্তি হলে ওই ইউনিয়নে নিয়ম অনুসারে নির্বাচনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”