সৌদি থেকে নারী গৃহকর্মীদের ফেরার কারণ নির্যাতন নয়: সংসদীয় দল

সৌদি আরব সফর করে আসা একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি থেকে বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের ঘরে ফেরার তাড়না সেখানে নির্যাতনের জন্য নয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2016, 05:29 PM
Updated : 16 Nov 2016, 05:48 PM

গৃহকর্মীরা সেখানে ‘বেশ ভালো আছেন’ দাবি করে তারা বলছেন, ভাষা না জানা, খাবার ভালো না লাগা এবং ঘরের প্রতি অতি টানের কারণে তারা দেশে ফিরতে চান।

বুধবার জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ-সৌদি আরব সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের চেয়ারম্যান ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন একথা বলেন।

তিনি বলেন, “সৌদিতে ৭০ হাজার বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে। কিন্তু নির্যাতন ছাড়াও বিভিন্ন কারণে সেখানকার সেল্টার সেন্টারে মাত্র ৩১৫ জন নারী রয়েছেন। তাই সেখানে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ নগণ্য।”

বজলুল হক বলেন, “বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থানরত শ্রমিকরা এবং গৃহকর্মীরা বেশ ভাল আছেন। সেখানে নিয়োজিত গৃহকর্মীদের ভাষা সম্পর্কে অজ্ঞতা, সৌদি খাবার খাওয়ার প্রতি অনাগ্রহ এবং দেশের থাকার প্রতি অতি আগ্রহকে দেশে ফিরে আসার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।”

সৌদি আরবের মজলিশে শুরার প্রধানের (স্পিকার) আমন্ত্রণে সভাপতির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল ৫ থেকে ১৩ নভেম্বর সৌদি আরব সফর করে। এ সফরের সময় প্রতিনিধি দল সৌদি আরবের মজলিশে শুরার প্রধান, শরম ও সমাজ উন্নয়ন মন্ত্রী, ধর্ম মন্ত্রী এবং নবনিযুক্ত ওআইসির মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তারা।

প্রতিনিধি দল সৌদি আরবের শ্রম ও সমাজ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে শ্রম বাজার ও বাংলাদেশ থেকে নিয়োগকৃত গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেন।

মতবিনিময়কালে কমিটির সদস্যের মধ্যে মো. নূরুল ইসলাম সুজন, মো. নজরুল ইসলাম বাবু এবং বায়রার সভাপতি বেনজির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতি মাসে ১০ হাজার নারী গৃহকর্মী সৌদি আরবে পাঠানোর কথা থাকলেও তা হচ্ছে না বলে গণমাধ্যমের খবর। নির্যাতনের ভয়ে বাংলাদেশি নারীরা সৌদি আরব যেতে চাচ্ছেন না বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়।

এর আগে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নারী কর্মীদের নাম নিবন্ধনের জন্য গত ৫ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে নিবন্ধন কার্যক্রম ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

নির্ধারিত সময়ে নাম নিবন্ধন করেন মাত্র দুই হাজার ৫৭০ জন নারী।

গত জুলাই মাসে সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি জানান, বিশ্বের মোট ৬৮টি দেশে বাংলাদেশ থেকে নারী কর্মী পাঠানো হয়েছে। গত এক যুগ ধরে বছরে এসব দেশে পাঁচ লাখ ৬ হাজার ৫০৬ জন নারী কর্মী গেছেন।