বিদায়ের আগে নিজেদের ইভিএম নিয়ে তৎপর ইসি

নিজেদের তৈরি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কারিগরি দিক ও ব্যবহার পর্যালোচনা করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ১৯ সদস্যের একটি কমিটি করেছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2016, 07:43 AM
Updated : 16 Nov 2016, 07:44 AM

ইভিএম যাত্রার ছয় বছর পর সরকারি-সেরকারি প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে প্রথমবারের মতো এ ধরনের কমিটি হলো।

ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইভিএম নিয়ে এ কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

২০১০ সালে এটিএম শামসুল হুদা কমিশনের সময় স্থানীয় পর্যায়ের ভোটে ইভিএম চালুর পর জাতীয় নির্বাচনেও তা ব্যবহারের প্রক্রিয়া চলেছিল।ওই সময় ইসি, বুয়েটের আইআইসিটি ও বিএমটিএফ এ কাজে সম্পৃক্ত ছিল।

পরবর্তীতে যাত্রার পাঁচ বছরের মাথায় কারিগরি ত্রুটিকে কেন্দ্র করে ইসি-বুয়েট দ্বন্দ্বে ইভিএম অধ্যায়ে ছেদ পড়ে। বিদ্যমান অবস্থায় এ বছরের জুলাইয়ে ইসি নিজেদের আইসিটি শাখার লোকবল দিয়ে তৈরি ইভিএমের নতুন প্রটোটাইপ নিয়ে আসে।

ইসি সচিবালয়ের মেনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার মো. ইকবাল জাভীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কমিশনের প্রস্তাবিত নতুন ইভিএমের কারিগরি ও ব্যবহারিক দিক, নির্বাচনে ব্যবহারের উপযোগিতা, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি পর্যালোচনার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গত ২৬ অক্টোবর ‘টেকনিক্যাল কমিটি’ করা হয়েছে।”

তিনি জানান, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জামিলুর রেজা চৌধুরীকে উপদেষ্টা, ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক ও ইসির সিস্টেম ম্যানেজারকে সদস্য সচিব করা কমিটিতে।

সদস্যের মধ্যে রয়েছেন বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, এমআইএসটি, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন করে প্রতিনিধি; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক (প্রশিক্ষণ)।

তবে ইভিএমের প্রথম প্রক্রিয়ায় থাকা বুয়েটের আইআইসিটি ও বিএমটিএফের প্রতিনিধি এ কমিটিতে কেন নেই তা জানাতে পারেননি ইসি কর্মকর্তারা।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন কারিগরি কমিটি গঠনকে ‘ভালো উদ্যোগ’ বললেও ইভিএম নিয়ে ইসির অবস্থান তার কাছে পরিষ্কার নয়।

তিনি বলেন, “আমরা বুয়েট ও বিএমটিএফের সহযোগিতায় খুব সুন্দরভাবে ইভিএমকে এগিয়ে নিয়ে গেলাম; এখন তা আরও অনেক দূর যেত। কিন্তু কেন আগেরটি বন্ধ করে দিল, এখন কেন নতুন নিল; আগের ইভিএমের ভুল, এখনকার ইভিএমের শুদ্ধতা কী- তা পর্যালোচনা করতে পারলে ভালো হয়।”

আগামীতেও আধুনিক এ প্রযুক্তি সবার আস্থা নিয়ে ভালোভাবে যাতে এগোতে পারে, ইসিকে সে ব্যবস্থাই করতে হবে বলে মনে করেন ২০০৭-২০১২ সাল পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে থাকা ছহুল।