শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে ‘কমরেড অজয় রায়’ স্মরণে আয়োজিক এক আলোচনায় তিনি বলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যারা বিনষ্ট করছে, যারা সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছে বা সাম্প্রদায়িক হামলা করছে- যুদ্ধাপরাধীদের মত তাদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিৎ। ”
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পাঁচদিনের ব্যবধানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে দুইদফা হামলার মধ্যে ‘কমরেড মনিসিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট’ আয়োজিত এ স্মরণসভায় এই মন্তব্য করলেন জয়ন্তী রায়।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারলেও সাম্প্রদায়িক হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের কেন বিচার করতে পারছেন না’ সেই প্রশ্ন রাখেন সদ্য প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতা, লেখক, শিক্ষাবিদ অজয় রায়ের এই সহধর্মিনী।
স্মরণসভায় অজয় রায়ের রাজনৈতিক সহকর্মী, অনুসারী, রাজনীতিক, লেখক, সাংবাদিক ও পরিজনেরাও স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন।
তারা বলেন, সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতার বিপরীতে আজীবন ‘বাঙালি জাতিসত্ত্বাকে’ সংহত করে গেছেন উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব অজয় রায়। রাজনীতিতে, লেখায়-গবেষণায় বাঙালির শেকড় সন্ধানই ছিল তার উপজীব্য। আর এভাবেই তিনি বাঙালির অসাম্প্রদায়িক জাতিসত্ত্বাকে নির্মাণ করে গেছেন।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অজয় রায় সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চেরও সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন। ৮৮ বছর বয়সী এই বাম নেতা দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগে গত ১৭ অক্টোবর মারা যান।
স্মরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘মনিসিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট’র সভাপতি শেখর দত্ত। সঞ্চালনায় ছিলেন ট্রাস্টের সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন। জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শুরু হয় স্মরণ অনুষ্ঠান।
আলোচনায় অন্যদের মধ্যে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও আদিবাসীদের অধিকার আন্দোলনের নেতা পঙ্কজ ভট্টচার্য, আওয়ামী লীগ নেতা নূহ-উল-আলম লেনিন, অর্থনীতিবিদ খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ, নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস, সাংবাদিক আবেদ খান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ও সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন তারিক আলী অংশ নেন।
এছাড়া নারীনেত্রী ফৌজিয়া মোসলেম, শ্রমিকনেতা ওয়াজেদুল ইসলাম, বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, ‘মনিসিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট’র সদস্য মুকুল চৌধুরী ও প্রদীপ চক্রবর্তীও অংশ নেন।