‘আমাদের অপরাধ কী’

কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বাড়ি ও মন্দিরে পাঁচ দিনের মধ‌্যে দুই দফা হামলার পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ‌্যে।

মাসুম বিল্লাহও পীযূষ কান্তি আচার্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2016, 07:06 PM
Updated : 4 Nov 2016, 08:22 PM

প্রাথমিকভাবে সাম্প্রদায়িক হামলার কথা বলা হলেও শুক্রবার ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় তিন নেতাকে বহিষ্কারের মধ‌্য দিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বিষয়ও আলোচনায় এসেছে।

শুক্রবার ভোরে কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত নাসিরনগরের বণিকপাড়ার রাজীব দেব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পিছনের ঘটনা যা-ই হোক এভাবে বারবার হামলার শিকার হয়ে তারা দিশেহারা বোধ করছেন।

“কেউ বলতেছে রাজনৈতিক কারণে। রাজনৈতিক কারণে হোক বা যা-ই হোক, আমাদের অপরাধ কী? সব মিলিয়ে আমরা অনেক আতঙ্কের মধ্যে আছি।”

হঠাৎ এই আক্রমণের কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না আগুনে গোয়ালঘরের সঙ্গে বসতঘরের একাংশ পোড়া দক্ষিণপাড়ার গৃহবধূ প্রণতি সরকারও।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কে বা কারা আগুন দিয়েছে আমরা জানি না।

“কখন কী হয় সেই আতঙ্কে আমরা আছি। কোন কারণে কী হচ্ছে আমরা বুঝছি না।”

শুক্রবার ভোররাতের আগুনে পোড়া ঘর

এ হামলার প্রতিবাদ হয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। স্থানীয় সাংসদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।

এ ঘটনায় সরকার ‘নির্বিকার নেই’ দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অপরাধী যারা-ই হোক না কেন শাস্তি তাদের পেতেই হবে।

ঢাকায় তার এ বক্তব‌্যের কয়েক ঘণ্টার মধ‌্যে নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগে সহ-সম্পাদক আবুল হাসমসহ স্থানীয় তিন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে হামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ ব‌্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। বহিষ্কৃতরা ছায়েদুল হকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

ফেইসবুকে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরের কয়েকটি হিন্দুপাড়ায় হামলা চালায় একদল লোক। ১৫টি মন্দির এবং দেড় শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের ‘গাফিলতি’ নিয়ে সমালোচনার মধ‌্যে সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব‌্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায় পুলিশ। এরইমধ‌্যে শুক্রবার ভোররাতে চারটি বাড়ির সাতটি ঘর ও একটি মন্দিরে আগুন দেওয়া হয়।

আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস‌্য মোতায়েন থাকার পরও কীভাবে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

রোববার দুপুর থেকে কয়েক ঘণ্টার হামলায় ১৫টি মন্দির ও দেড় শতাধিক ঘর-বাড়ি ভাংচুর করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ সার্বক্ষণিক পাহারায় ছিল। তবে বাড়ির ভিতর অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় তা পুলিশের দৃষ্টিতে আসেনি।”

কারা আগুন দিয়েছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। শুক্রবার ওই এলাকার নিরাপত্তা আরও জোরদার করার কথা জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

‘আগুন দিয়েছে চেনাজানারা’

ভোররাতে নাসিরনগরের তিনটি পাড়ায় পাঁচ জায়গায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটলেও সবগুলোর সময় ছিল একই। আগুন দেওয়ার স্থানগুলোয়ও মিল দেখা যায়- বসতঘরের লাগোয়া রান্নাঘর, গোয়াল ঘর কিংবা লাকড়ি আর কাঠ রাখার জায়গায়।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, রাত সাড়ে ৩টার আগে-পরে আগুন দেওয়ার ঘটনাগুলো ঘটে।

বাড়িগুলোর অবস্থান এমন জায়গায় যেখানে পরিচিতরা ছাড়া কারও পক্ষে এভাবে আগুন দিয়ে চলে যাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তারা। তবে কাউকে দেখেননি বলে জানিয়েছেন তারা।

বণিকপাড়ায় রাজীবদের বাড়ির লাকড়ি রাখার স্থানে আগুন দেওয়া হয়। সেটার লাগোয়া বসতঘরে আগুনের তাপ গায়ে লেগে আর নাকে ধোঁয়ার গন্ধে ঘুম ভাঙে তাদের।

সরু পথ দিয়ে প্রবেশ করতে হয় রাজীবদের বাড়িতে। বণিকপাড়ার দক্ষিণ দিকে টিঅ‌্যান্ডটি অফিসের দেয়াল, পশ্চিম দিকে সরকারি কোয়ার্টারের বাউন্ডারি, উত্তর দিকে পল্লী উন্নয়ন একাডেমির দেয়াল ও ইউএনও কার্যালয় এবং পূর্বদিকে শহীদ মিনার এলাকার রাস্তা।

আগে খেকে চেনাজানারাই আগুন দিয়েছে বলে সন্দেহ ক্ষতিগ্রস্তদের।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাজীব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রথমে দাদি-ফুপির গায়ে আগুনের তাপ আর ঘরের চালের ফাঁক দিয়ে নাকে ধোঁয়া লাগলে তারা চিৎকার দিয়ে ওঠেন। একই সময় পাড়াপড়শিরা অন্য বাড়ির আগুন দেখে ‘আগুন-আগুন’ বলে চিৎকার করে ওঠেন।

“একেবারে চেনাজানা কেউ না হলে এখান থেকে আগুন দিয়ে বেরিয়ে চলে যাওয়া সম্ভব না। তবে আমরা বলতে পারতেছি না, আসলে কারা আগুনটা দিল,” বলেন তিনি।

এর কিছু দূরে একই সময়ে শীলপাড়া ঠাকুরবাড়ির বিশ্বদেব চক্রবর্তী কেসুর কাঠ রাখার স্থানে আগুন দেওয়া হয়। প্রায় দুই লাখ টাকার কাঠ পুড়েছে বলে জানান কেসু।

তিনি বলেন, “আড়াইটার দিকে কাকার শেষকৃত্য শেষ করে এসে আমরা সবাই ঘুমিয়ে যাই। অন্য পাড়ার আগুন দেখে পাশের বাড়ির লোকজন যখন চিৎকার করে ওঠে, তখন আমরা ঘুম থেকে উঠে দেখি- আমাদের এখানেও আগুন।”

পাশের বাড়ির একজনের ‍উদ্ধৃতি দিয়ে কেসু বলেন, “তারা বলেছে, ‘চোর চোর চিৎকার করে কারা যেন পালিয়ে গেছে। তারা চিনতে পারেনি।”

তিনি বলেন, ৩০ তারিখে বিভিন্ন এলাকায় ভাংচুরের ঘটনা ঘটল। এখন বাড়ির আঙিনার জিনিসপত্র রাখার জায়গায় আগুন দেওয়া হলো।

“এরপর যদি বসতঘরে আগুন দেয়, সে আতঙ্কে আমরা আছি।”

দক্ষিণপাড়ায় মৃণালকান্তির বাড়িতে ভাড়া থাকেন রিংকু রাণী মল্লিক। টিনশেড ঘর লাগোয়া তাদের রান্নাঘরে আগুন দেওয়া হয়।

আগুনের ভয়ে তাড়াহুড়োয় ছোট ছেলেকে ঘরে ফেলে বেরিয়ে আসার অপরাধ বোধ এখনও কাজ করছে তার মধ্যে।

“বাচ্চাটারে ঘরে রাইখ্যাই বাইর গেছি। বাইর হইয়া দেখি, এইহানো আগুন ওইহানো আগুন। এমন আগুনের দৃশ্য আমি আর কখনো দেখি নাই,” কোলে নিজের ছেলেকে দেখিয়ে বলেন রিংকু।

তিনি জানান, মৃণালকান্তির লাকড়ি আর অন্যান্য জিনিসপত্র রাখার আরেকটি জায়গায় আগুন দেওয়া হলেও সেখানে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

একই পাড়ায় ফুলকিশোর দাসের বসতঘরের পাশে গোয়াল ঘরে আগুন দেওয়া হলেও সেটার লাগোয়া বসতঘরের কিছু অংশও পুড়ে যায়।

ঘটনার বিবরণে ফুলকিশোরের স্ত্রী প্রণতি বলেন, “ওই সময় গোয়াল ঘরে ৮টা গরু ছিল। আমরা দ্রুত গিয়ে গরুগুলো ছেড়ে দিই। পাড়ার সবাই মিলে আগুন নিভিয়ে ফেলি।”

আগুনে ‘গোলা ঘর’ পুড়েছে শীলপাড়া জগন্নাথ মন্দির এলাকার কেশব চক্রবর্তীর।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগুনের ধোঁয়ার গন্ধে আমার ঘুম ভাঙে। পরে দেখতে পাই, গোলা ঘর পুড়ে ছাই।”

আগুনে প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষতি হওয়ার কথা জানান তিনি।

জয়নগর পাড়ার সাগরদাসের বাড়িতে একটি পরিত্যক্ত মন্দিরে আগুন দেওয়া হয়। আগে জমজমাট পূজা হলেও এখন সেটা মাছ ধরার জাল রাখার জায়গা হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। আগুনের ফলে অনেকগুলো জাল পুড়ে গেছে বলে এলাকাবাসী জানান।

স্থানীয় সাংসদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগ দাবি করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

পাহারায় এলাকাবাসী

মন্দির ও ঘর-বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাটের রেশ কাটতে না কাটতে পুলিশ মোতায়েনের মধ্যে বাড়িতে অগ্নিসংযোগের পর নাসিরনগরের নিরাপত্তায় এবার এলাকাবাসীও নেমেছে।

শুক্রবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘর-বাড়ির নিরাপত্তায় অনেককে নিজেরা পাহারায় বসতে দেখা গেছে।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর ইউনিয়নের কাশীপাড়া কালী মন্দিরের সামনে চারজন আর্মড পুলিশের উপস্থিতিতে পাহারার আয়োজন করতে দেখা যায় ওই পাড়ার কিছু বাসিন্দাকে।

তাদের একজন স্বপন কুমার দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ পাড়ায় বেশি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। তিনটি মন্দিরের প্রতিটিতে ভাংচুর করা হয়েছিল।

“তবে আগুন দেওয়ার পর আমরা বেশি ভয়ে আছি। আজ থেকে পাহারা দিব রাত জেগে।”

১৫ থেকে ২০ জন মিলে রাতে পালা করে পাড়া পাহারা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

ঠাকুরপাড়ার বিশ্বদেব চক্রবর্তী (কেসু) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেলা প্রশাসক মহোদয়ও এলাকায় পাহারা বসানোর কথা বলেছেন। এলাকার হিন্দু-মুসলমান সবাই মিলে একটা পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি।”

নতুন ওসি

জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত পরিদর্শক মো. আবু জাফরকে নাসিরনগর থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয় বলে জেলার জ‌্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) রাজন কুমার দাস জানান।

নতুন ওসি জাফর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের মধ‌্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে আজ রাত থেকে পাহারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করা হচ্ছে।”

রোববার প্রথম দফা হামলার পর সমালোচনার মধ‌্যে বৃহস্পতিবার নাসিরনগরের ওসি আবদুল কাদেরকে ওই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে নাসিরনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেনকেও।

৩০ অক্টোবর ইউএনও মোয়াজ্জেম ও ওসি আবদুল কাদেরের উপস্থিতিতে একটি সমাবেশে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্যের পর ওই হামলা হয়। পরে এ ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ উঠলে সাংবাদিকের প্রতি মারমুখী হন তিনি।

রাজনীতির কেন্দ্রে নাসিরনগর

হিন্দুদের ওপর হামলার এই ঘটনাই শুক্রবার দেশের রাজনীতির প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে।

বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এবং আনিসুর রহমান মল্লিকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির একটি দল এদিন নাসিরনগরে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দুটি দলের নেতারাই মনে করছেন।

নতুন করে আগুন দেওয়ার ঘটনা প্রশাসনের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মন্তব‌্য তাদের।

এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেন উভয় দলের নেতারা। একই দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি। পাশাপাশি সেখানকার ‘ব্যর্থ’ প্রশাসনের অপসারণ এবং আক্রান্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দলটি।

এই হামলা-অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বেশ কয়েকটি সংগঠন। এক পর্যায়ে সড়ক অবরোধ করেন তারা।

শাহবাগে বিক্ষোভের মুখে আটকা পড়েন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ

সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল বলেন, “ঘটনা ঘটার কয়েক দিন পরে মন্ত্রী ছায়েদুল হক এলাকায় গিয়েছেন। তিনি যাওয়ার পরেও সেখানে আবার হামলা হয়েছে। এতেই বোঝা যায় তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।”

এই ঘটনায় তিনি মন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগ দাবি করলে উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা সমস্বরে তার প্রতি সমর্থন জানান।

তাপস বলেন, “নাসিরনগরের ইউএনও চৌধুরী মোয়াজ্জেম ওইদিন সমাবেশের অনুমতি না দিলে এই হামলার ঘটনা ঘটত না। আমরা ইউএনওর অপসারণেরও দাবি জানাচ্ছি।”

তাদের ওই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বেলা ১২টার দিকে শাহবাগে ফিরে সড়ক অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

তাদের অবরোধের কারণে প্রায় এক ঘণ্টা শাহবাগ মোড় হয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে।

এক পর্যায়ে গাড়ি থেকে নেমে এসে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন তিনি

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফেরার পথে ওই বিক্ষোভে আটকা পড়েন ক্ষমতাসীন দলের নেতা মাহবুব-উল- আলম হানিফ।

তার সঙ্গের এক ব‌্যক্তি রাস্তা ছেড়ে দিতে বললে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হয়। এ সময় হানিফের গাড়িতে কয়েকজনকে লাথি মারতে দেখা যায়। কয়েকটি জুতাও এসে গাড়ির ওপর পড়ে বলে প্রত‌্যক্ষদর্শীরা জানান।

পরে পরে হানিফ বেরিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পরে রাতে বনানীতে গারোদের ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়ানগালা’ উৎসবের উদ্বোধনীতে সংখ্যালঘুদের সাহসের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সংখ‌্যালঘুদের ওপর হামলা হলে কঠোরভাবে মোকাবেলার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা ভয়কে জয় করবেন, আপনাদের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।

“শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে আছে, আমরা কোনোভাবে আপনাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে দেব না।”