হিন্দুদের উপর হামলা: মন্ত্রী ছায়েদুলের পদত্যাগ দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ওই এলাকার সাংসদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগের দাবি উঠেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2016, 07:44 AM
Updated : 4 Nov 2016, 07:44 AM

শুক্রবার রাজধানীতে এক কর্মসূচিতে মন্ত্রীর পদত্যাগের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেনের অপসারণ চান হিন্দুপ্রধান বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

ওই ঘটনায় বিক্ষোভ দেখাতে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের পর সড়ক অবরোধ করেন তারা।

সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল বলেন, “ঘটনা ঘটার কয়েক দিন পরে মন্ত্রী ছায়েদুল হক এলাকায় গিয়েছেন। তিনি যাওয়ার পরেও সেখানে আবার হামলা হয়েছে। এতেই বোঝা যায় তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।”

এই ঘটনায় তিনি মন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগ দাবি করলে উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা সমস্বরে তার প্রতি সমর্থন জানান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক (ফাইল ছবি)

তাপস বলেন, “নাসিরনগরের ইউএনও চৌধুরী মোয়াজ্জেম ওইদিন সমাবেশের অনুমতি না দিলে এই হামলার ঘটনা ঘটত না। আমরা ইউএনওর অপসারণেরও দাবি জানাচ্ছি।”

ফেইসবুকে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ ওঠেছে।

নাসিরনগরের ইউএনও মোয়াজ্জেম ও ওসি আবদুল কাদেরের উপস্থিতিতে একটি সমাবেশে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্যের পর ওই হামলা হয়। ওই ঘটনার পর সহস্রাধিক লোককে আসামি করে দুটি মামলা হয়েছে; গঠন করা হয়েছে তিনটি তদন্ত কমিটি।

মন্দিরসহ বাড়িঘরে হামলার পাঁচ দিনের মাথায় পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই শুক্রবার নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আবারও আগুন দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনার প্রতিবাদ ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে মিলিত হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ২০টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে এসে বেলা ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেন তারা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ, জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট, জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি, বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদ, জাগো হিন্দু পরিষদের সহস্রাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীও বিক্ষোভে অংশ নেন।

রমনা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশান (পেট্রোল) এস এম ইমানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিক্ষোভকারীরা প্রেসক্লাবের সামনের একপাশের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে অন্য পাশ দিয়ে দ্বিমুখী যান চলাচলের ব‌্যবস্থা করা হয়।