‘ফিল দ্য জেল’ নামের এ প্রকল্পে টাকার বিনিময়ে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে রাত কাটানো এবং খাওয়ার সুযোগ মিলবে; পাওয়া যাবে বন্দি জীবনের অভিজ্ঞতা। সেই সঙ্গে জানা যাবে কারাগারের ভেতরের নিয়ম-কানুন।
শুক্রবার পুরনো কারাগারের ভেতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন সংবাদিকদের জানান, বিষয়টি এখনও ধারণার পর্যায়ে রয়েছে। তবে তারা আশাবাদী, এ প্রকল্প চালু করা যাবে।
“সাধারণ জনগণের মধ্যে অনেকে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়, কারাগারে থাকতে কেমন লাগে সে বিষয়টা ‘ফিল’ করতে চান তারা। আমরা হয়ত সে সুযোগটা এখানে রাখতে পারি।”
কারা মহাপরিদর্শক জানান, ফিলিপিন্স ও ভারতে জাদুঘরে রূপান্তরিত পুরনো কয়েকটি কারাগার সম্প্রতি পরিদর্শন করে তারা ‘ফিল দ্য জেল’ আইডিয়াটি পেয়েছেন।
‘ফিল দ্য জেল’ পরিকল্পনার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “কেউ অর্থের বিনিময়ে একদিন বা দুদিনের জন্য কারাগারের অভ্যন্তরের যে সমস্ত নিয়ম কানুন আছে, যে সমস্ত খাবার আছে, যেভাবে চলাফেরা করতে হয়, সব বিধিনিষেধ মেনে ভেতরে থাকার সুযোগ করে দেব। যাতে করে তারা ফিল করতে পারেন কারাগারের ভেতরে কেমন লাগে।”
ইফতেখার উদ্দীন বলেন, এই কারাগারকে জাদুঘরে রূপান্তর করতে তাদের যে মূল প্রজেক্ট, তা বাস্তবায়ন করতে অন্তত তিন বছর সময় লাগবে। তারপর পুরোপুরি উন্মুক্ত করা যাবে।
“তবে তার আগে চেষ্টা করব সরকারের অনুমতি নিয়ে সপ্তাহে একদিন বা দুই দিনের জন্য যদি খুলে দিতে পারি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ এপ্রিল কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারের উদ্বোধন করার পর ২৯ জুলাই নাজিম উদ্দিন রোড থেকে বন্দিদের সেখানে স্থানান্তর করা হয়।
পুরনো কারাগারকে ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রমাণ্য দলিল’ হিসেবে বর্ণনা করে এর সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন কারা মহাপরিদর্শক।
“এ কারাগারেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের কয়েকটি বছর কেটেছে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর এখানেই সংঘটিত হয়ছে জাতীয় চার নেতার নিমর্ম হত্যাযজ্ঞ। ঐতিহাসিকভাবে এই স্থান গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।”
ইফতেখার জানান, জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে এ বছর কারাগারের ভেতরে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
‘সংগ্রামী জীবনগাঁথা’ শিরোনামে পাঁচ দিনের এ প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার দুর্লভ ১৪৫টি আলোকচিত্র দেখা যাবে।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন হবে। প্রদর্শনীর কিউরেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে আব্দুল মোমেন।