বিদ‌্যুৎ কেন্দ্রবিরোধীদের বিরোধিতায় এনজিওগুলোকে চান অর্থ প্রতিমন্ত্রী

সরকারের অগ্রাধিকারের খাত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছে, তাদের বিরোধিতায় নামতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2016, 02:50 PM
Updated : 27 Oct 2016, 02:50 PM

নতুন এক আইন নিয়ে এনজিওগুলোর অসন্তোষের মধ‌্যে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান সরকারের এই প্রতিমন্ত্রী।

সম্প্রতি পাস হওয়া ‘বৈদেশিক অনুদান রেগুলেশন বিল’ চিন্তা, মত, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা এবং সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে বলে এনজিওগুলোর অভিমত।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-৬ বাস্তবায়নে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিদ‌্যুৎ কেন্দ্রবিরোধীদের বিরোধিতায় এনজিওগুলোর সক্রিয়তা চান মান্নান।

তিনি বলেন, “আমাদের সরকার সকল মনোযোগ দিয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে। জাতীয় অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যারা সমস্যা তৈরি করছে তাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি আছি আমরা। তাদের যদি কোনো ধারণা থাকে, সংশয় থাকে, তাহলে তারা বলতে পারে।

“তা না করে তারা নাশকতার পথে গেছে। এ কারণে তারা সরাসরি ফৌজদারি বিচারের আওতায় চলে আসে। এ ধরনের কাজের দিকে সরকারও শক্ত অবস্থানে আছে।”

ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ‌্য সুন্দরবনের কাছে ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ‌্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতা করে বাম দলগুলো তেল-গ‌্যাস রক্ষা কমিটির ব‌্যানারে আন্দোলন শুরুর পর বিএনপিও একই দাবি তুলেছে।

এই বিদ‌্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে ঠেলে দেবে বলে পরিবেশবাদীরা দাবি করলেও সরকার বলছে, সুন্দরবনের ক্ষতি না করেই এই কেন্দ্র নির্মিত হবে।

রামপাল বিদ‌্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতায় এনজিওগুলোর সক্রিয়তা চেয়ে প্রতিমন্ত্রী মান্নান বলেন, “তৃণমূলে সব পর্যায়ে আপনাদের সংগঠন আছে। আমরা আশা করব, আপনারা সেখানেও নিজেদের স্বার্থে, আমাদের স্বার্থে কাজ করবেন।”

বেসরকারি সংস্থা ডর্‌প-এর সহযোগিতায় ওয়াশ অ্যালায়েন্স আয়োজিত এই সভায় তিনি বলেন, “সব কাজের শুরুতে বিদ্যুৎ, বিদ্যুৎ এবং বিদ্যুৎ। আমরা সেই ‘ম্যাজিক ওয়ার্ডে’ হাত দিয়েছি।

“আমরা ৮০ শতাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। মানুষ বসে থাকলেও বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে। বাকিগুলোতে পৌঁছে যাবে।”

বাংলামটরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এই সভায় সুপেয় পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও নারী স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের বিষয় তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানের ধারণাপত্রে ওয়াশ অ্যালায়েন্সের সমন্বয়ক অলক কুমার মজুমদার সরকারের প্রশংসা করে বলেন, “মাত্র এক যুগের ব্যবধানে খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগের হার ৪২ ভাগ থেকে এক ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার।

“বর্তমানে জনসংখ্যার ৬১ ভাগ উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা ভোগ করছে। অবশিষ্টদের মধ্যে ২৮ ভাগ যৌথভাবে আধা-পাকা এবং ১০ ভাগ সাধারণ ল্যাট্রিন ব্যবহার করছে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা হিসেবে কাজ করছে।”

ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় সংসদ সদস্য নূরজাহান জাহান মুক্তা, ওয়াশ অ্যালাইয়েন্সের দেশীয় প্রধান সারা আহরারি, ডর্‌প চেয়ারম্যান আজহার আলী তালুকদার বক্তব্য দেন।