অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে প্রতারণা, স্বরাষ্ট্রের সাহায‌্য চাইল শিক্ষা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক ব‌্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2016, 12:57 PM
Updated : 27 Oct 2016, 12:57 PM
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, কমল কান্তি সরকার হিসেবে পরিচয় দেওয়া ওই ব‌্যক্তি মাদ্রাসা শাখার অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পরিচয় দিয়ে এমপিও নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা করেন।

‘গোয়েন্দা সংস্থার’ সহযোগিতা নিয়ে দশ জন শিক্ষকের সঙ্গে তার প্রতারণার চেষ্টার প্রমাণ পাওয়ার পর বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই চিঠি পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমপিও অধিশাখা।

চিঠিতে জানানো হয়, ওই ব‌্যক্তি একটি রবি মোবাইল নম্বর থেকে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ফোন করেন এবং নিজেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা শাখার অতিরিক্ত সচিব কমল কান্তি সরকার দাবি করে তাদের এমপিও স্থগিত করার ভুয়া খবর দেন।

এমপিও ফিরে পেতে তার কথিত সেকশন অফিসার এনামুল কবিরের চারটি মোবাইল নম্বর (০১৮৬৩-৪৩২৪২৯, ০১৭৮৯-৪৯০৮৩২, ০১৮৭৯-৪৯০৮৩২, ০১৭৭৪-১৬৮৯৯৯) দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন সেই ‘ভুয়া অতিরিক্ত সচিব’।

সেসব নম্বরে ফোন করলে ওই ব্যক্তিই ফোন ধরে নিজেকে সেকশন অফিসার পরিচয় দিয়ে এমপিও নিয়মিত করতে বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে এমপিও বন্ধের হুমকি দেন বলে জানানো হয় চিঠিতে।

কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কমল কান্তি সরকার নামে কোনো অতিরিক্ত সচিব নেই।

ওই ব‌্যক্তি চাঁদপুরের রাগই উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনকে গত ৭ অক্টোবর ফোন করেন।

আনোয়ার বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফোন দিয়ে আমাকে সে বলে, এমপিও লিস্টে আমার নামের বদলে আরেকজনের নাম এসেছে, এটা পরিবর্তনের এখনই সময়।”

“গত বছরও এ ধরনের ফোন পেয়েছিলাম। তাই এ ধরনের প্রতারণা সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা আছে। আমি তাকে বলি, যদি মন্ত্রণালয় বা ডিজি অফিস ভুল করে, তারাই তা সংশোধন করবে। আগে সেই কাগজ হাতে আসুক,” এরপর সে ফোন কেটে দেয়।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, গত ৫ অক্টোবর বরিশালের আফসার উদ্দিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সুলতান মাহমুদ এবং চট্টগ্রামের পুকুরিয়া আনসারুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ দিদারুল আলম চৌধুরীকে ফোন করেন সেই ‘ভুয়া অতিরিক্ত সচিব’।

পরদিন ৬ অক্টোবর চাঁদপুরের হোসেনপুর গার্লাস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাসিনা আকতারকেও ফোন করেন তিনি।

গত ৭ অক্টোবর কুমিল্লার মদিনাতুল উলু-ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, শরীয়তপুরের নলদিয়া হামিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তছলিম উদ্দিন, কুমিল্লার কামারগাঁও ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হারুল অর রশিদ এবং কুমিল্লার গয়েশ হাজী মকছুদ আলী গাউছিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে ফোন করে সেই ‘প্রতারক’।

এছাড়া রাজবাড়ীর বাগরাতুল ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ‍নুরুল ইসলাম এবং কুমিল্লার কলকাজোড়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু তাহেল সালাহ উদ্দিনকে গত ৮ অক্টোবর ফোন করেন তিনি।

এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। এর অনুলিপি মহাপুলিশ পরিদর্শককেও দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমপিও শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, গোয়েন্দা পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তেতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে।