মঙ্গলবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ সাংবাদিকদের বলেন, “হোটেলের সংস্কার কাজ দফায় দফায় পেছানো হচ্ছে। তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও কাজের অগ্রগতি নেই। চলতি অক্টোবরে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন শুনছি আগামী মার্চে শেষ হবে।
“তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে জরিমানা আদায়ের জন্য বলা হয়েছে।”
কী পরিমাণ জরিমানা আদায়ের কথা বলা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা আলোচনা করে নির্ধারণ করতে হবে।”
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য মো. আলী আশরাফ, তানভীর ইমাম, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মো. আফতাব উদ্দীন সরকার ও সাবিহা নাহার বেগম অংশ নেন।
পাঁচ দশকের পুরনো এ হোটেলটি সংস্কারের পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল হিসেবে যাত্রা শুরু করবে।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপ ১৯৬৬ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত এ হোটেলের ব্যবস্থাপনায় ছিল। তারা আবার ফেরার জন্য ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
১৯৮৩ সালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল বিদায় নেওয়ার পর হোটেলটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব এসেছিল শেরাটন। প্রায় ২৮ বছর পর ২০১১ সালের এপ্রিলে শেরাটন চলে যায়।
ওই সময় থেকে রূপসী বাংলা নাম নিয়ে চালু হয় বাংলাদেশের নানা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই হোটেল। সরকারের মালিকানার এই হোটেলটি তখন পরিচালনার দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড।
রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ হোটেলটি ১৯৮১ সালে সম্প্রসারণ এবং বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু সংস্কার হলেও আন্তর্জাতিক ‘ফাইভ স্টার’ মানে তোলার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই বৈশ্বিক হোটেল পরিচালন কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে তাগাদা আসছিল।
কর্তৃপক্ষ বলছে, ফাইভ স্টার হোটেলের আন্তর্জাতিক মান রক্ষার জন্য সংস্কারের মাধ্যমে কক্ষগুলো বড় করা হবে। ফলে কক্ষসংখ্যা কমে হবে ২৩০টি। এছাড়া আসবাব, সুইমিং পুল, জিমনেশিয়ামের আধুনিকায়নসহ অন্যান্য সেবাও যুক্ত করা হবে।
সংস্কার কাজের জন্য ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে তা পিছিয়ে চলতি অক্টোবরে করা হয়। এখন ২০১৭ সালের মার্চে শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই সংস্কার কাজের তত্ত্বাবধান করছে ইন্টারকন্টিনেন্টাল, যাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা।
চীনা প্রতিষ্ঠান নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান চারুতা প্রাইভেট লিমিটেড যৌথভাবে এ কাজের ঠিকাদার। গত বছরের ডিসেম্বরে সস্কার কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিকের মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠান দুটির কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলাও হয়।
এর আগেও রূপসী বাংলার কাজের অগ্রগতির জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। তখন সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়েছিল, নকশার ত্রুটির কারণে সংস্কার কাজে দেরি হচ্ছে।