নিরবচ্ছিন্ন টেলিটক নেটওয়ার্কের জন্য এক বছর চান তারানা

দেশের সব জায়গায় রাষ্ট্রীয় টেলিফোন অপারেটর টেলিটকের নেটওয়ার্ক পৌঁছাতে এক বছর সময় চেয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2016, 05:13 PM
Updated : 22 Oct 2016, 06:04 PM

তিনি বলেছেন, “আমরা খুব দ্রুততার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। অতি শিগগির সারাদেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে। তবে এর জন্য আরও এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।”

আওয়ামী লীগের সম্মেলনের ফাঁকে শনিবার দলটির গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত ‘লেটস টক উইথ আওয়ামী লীগ’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন।

দেশের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিটকের নেটওয়ার্ক না পাওয়ার কথা তুলে ধরে এক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর কাছে জানতে চান নওগাঁর ভবেরহাট উপজেলা থেকে সম্মেলনে আসা এক ছাত্রলীগ নেতা।

এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল থেকে আসা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দলের অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ বরে দেয় সিআরআই কর্তৃপক্ষ।

সাংসদ নাহিম রাজ্জাকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে তারানা হালিম ছাড়াও প্রশ্নের জবাবে দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক সাংসদ ডা. মুরাদ হাসান এবং সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু।

ক্রমশ গ্রাহক হারাতে থাকা ল্যান্ডফোন নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্যোগ আছে কি না সে প্রশ্নের জবাবে তারানা বলেন, “আমাদের এই সমস্যার জন্য কেউ একা দায়ী নয়। আমরা গ্রাহকরা যেমন এর ব্যবহার কমিয়ে ফেলছি, তেমনিভাবে এতে নানা সমস্যা সৃষ্টি করছে লাইনম্যানরা। তাদের এই দৌরাত্ম্য কমাতে না পারলে টেলিফোন লাইন হারানোর হাত থেকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে।” 

আওয়ামী লীগের গবেষণা সেলের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে রাজনীতির প্রতি আগ্রহী করে তোলার আহ্বান জানান তারানা হালিম।

বক্তব্যে ইয়াফেস ওসমান বলেন, “যেখানে তিন কোটি মানুষের হাতে মোবাইল ফোন ছিল, এখন সেটা পৌঁছেছে ১৩ কোটি মানুষের হাতে। মানুষ কেবল কথা বলছে না এখন, মুঠোফোনের অ্যাপস ব্যবহার করে বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে।

“এটা এমনি এমনি হয়নি। আমরা দেশের মানুষের দিকে তাকিয়ে নানা প্রোগ্রাম নিয়েছি, জানতে চেয়েছি মানুষ কী চায়। তার ফল হিসাবে প্রযুক্তিতে আমাদের এই সাফল্য এসেছে।”

অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “এক সময় বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ছিল, বিএনপি-জামায়াত সরকারের কারণে। কী যাদু করলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা, এখান থেকে সরে এসে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে গর্বিত করলেন!”

এক প্রশ্নকর্তার এলাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এখন তার এলাকায় মানুষ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমির নথিপত্র জানতে পারছেন, মোবাইলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারছেন এবং প্রযুক্তি সহজ করে দিয়েছে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা। আগে সেটা করতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হত, সুযোগ ছিল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি করার।”

এখন হয়রানি করা ‘অসম্ভব’ এবং দুর্নীতির ‘কোনো সুযোগ নেই’ বলে দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী পলক।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিঘরে একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। আমরা ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছি। সেখানে একজন করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া প্রশিক্ষণ দিয়ে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের আমরা ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজের উপযোগী করে গড়ে তুলছি।”

অনুষ্ঠানে সিলেটের জাফলং থেকে আসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উদ্যোগী হতে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি অভিযোগ করেন, নির্দলীয় নির্বাচনে ছয়বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং মুক্তিযোদ্ধা হয়েও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের কারণে দলীয় মনোনয়ন পাননি। এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জিতে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন তিনি।

এক্ষেত্রে নিজের কিছু করার ক্ষমতা না থাকার কথা স্বীকার করে সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেন, “তৃণমূলে আপনাদের অনেক সমস্যা আছে। সেগুলো নানা মাধ্যমে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যায়, আবার যায়ও না। দলে আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। তাহলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”