১০ টাকার চালে অনিয়ম বন্ধে কঠোর হওয়ার দাবি

হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা দরে চাল বিতরণ কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ এনে এর জড়িত ‘সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে নাগরিক সংহতি নামের একটি সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2016, 10:09 AM
Updated : 21 Oct 2016, 10:09 AM

শুক্রবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক, কৃষক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার কর্মীদের নিয়ে এক অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানানো হয়।

নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ বলেন, “১০ টাকার চাল বিতরণ নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এর সুফল পৌঁছাতে সরকারকে কঠোর হতে হবে। সরকারদলীয় যারা দুর্নীতির বৃত্ত টিকিয়ে রাখছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামে ‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

হতদরিদ্র ৫০ লাখ পরিবার মার্চ, এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর- এই পাঁচ মাস ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন। নারী, বিধবা ও প্রতিবন্ধী নারী প্রধান পরিবারকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে এ কর্মসূচিতে।

১০ টাকা কেজি দরের এই চাল কালোবাজারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই চাল বিতরণে কেউ অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গত ৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তার ওই নির্দেশের পর আট বিভাগের জন্য আটটি তদন্ত দল গঠন করে অনুসন্ধান চালিয়ে ৪৪ জনের ডিলারশিপ বাতিল করে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

নাগরিক সংহতির অবস্থান কর্মসূচিতে শরিফুজ্জামান শরিফ অভিযোগ করেন, সরকার ‘দুয়েকজন’ ডিলারকে মোবাইল কোর্টে সাজা দিলেও ‘দুর্নীতিতে জড়িত’ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস‌্য এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ‘আড়ালে থেকে যাচ্ছেন’।

তিনি বলেন, “দশ ধরনের দুর্নীতির খবর বিভিন্ন পত্রিকায় এসেছে। তার মানে এখানে বড় রকমের দুর্নীতি হচ্ছে। সেজন্য দুর্নীতির এই ক্ষেত্রগুলো দ্রুততম সময়ে বন্ধ করতে হবে।”

এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে যুবমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক সাব্বাহ আলী খান কলিন্স বলেন, জঙ্গিবাদ দমনের ক্ষেত্রে সরকার যেভাবে কঠিন ভূমিকা নিয়েছে, ১০ টাকায় চাল বিতরণের দুর্নীতিও সেভাবে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।

“কেবল কয়েকজন ডিলারকে গ্রেপ্তার করে কিছু হবে না। দলীয় রাজনীতির নামে যারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, তাদের ‍বিরুদ্ধেও কঠোর হতে হবে।”

যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ক্ষমতাসীনদের কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে সরকারের প্রশংসনীয় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যারা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

বেশ কিছু ডিলারকে গ্রেপ্তার করা হলেও দুর্নীতির পেছনের আসল ব‌্যক্তিরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনিও।

অন্যদের মধ্যে কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি জাহেদ ইকবাল খান, দলিত অধিকার আন্দোলনের নেতা এবিএম আনিসুজ্জামান এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন।