ভূমিকম্পে কী করতে হবে, মহড়া হবে সচিবালয়ে

ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে তার মহড়া হবে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2016, 03:30 PM
Updated : 6 Oct 2016, 03:30 PM

আগামী ৯ অক্টোবর বেলা ১১টায় এ মহড়ার আয়োজন করবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।

সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল এই আয়োজনের তথ্য সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন, “সচিবালয়ে ভালনারেবল (ঝুঁকিপূর্ণ) ভবন রয়েছে। ৩ ও ৪ নম্বর ভবন অনেক পুরনো। সচিবালয়ে অবস্থানকারীদের আমরা ভূমিকম্প নিয়ে সচেতন করব।”

সংবাদ সম্মেলনে মহড়ার বিভিন্ন দিক বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা।

তিনি বলেন, ৯ অক্টোবর সচিবালয়ের স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজের মধ্যে ওই মহড়া হবে ঢাকা থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে ধরে নিয়ে।

“ভূমিকম্পের সাথে সাথে সাইরেন বাজানো হবে। এতে বিভিন্ন ভবনের নিচতলায় অবস্থানকারী লোকজন মাথার উপর ব্যাগ, হাত বা শক্ত কিছু রেখে সারিবদ্ধভাবে বের হয়ে পূর্ব নির্ধারিত খোলা জায়গায় (এসেম্বলি পয়েন্ট) অবস্থান করবেন।

“সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে নির্ধারিত ব্যক্তিরা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মেইন সুইচ বন্ধ করবেন, লিফটগুলো ল্যান্ডিং পজিশনে আনা হবে, ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হবে।”

মোস্তফা বলেন, দ্বিতীয় তলা থেকে উপরের তলায় অবস্থানকারীরা কলাম ও বিমের সংযোগস্থল ঘেঁষে, শক্ত ও মজবুত টেবিলের নিচে বা ফার্নিচারের পাশে অবস্থান নেবেন। সে সময় ৬০ থেকে এক পর্যন্ত কাউন্টডাউন করবেন।

কাউন্টডাউন অর্থাৎ ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি থেমে যাওয়ার ২৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড পর দ্বিতীয় সাইরেন বাজালে সিঁড়ি বেয়ে ভবনের সেকশন অনুযায়ী নিচে নেমে সবাই সারিবদ্ধভাবে অবস্থান করবেন।

সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় কেউ আহত হলে তাদের ‘ইমারজেন্সি রেসকিউ পদ্ধতিতে’ উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার স্থানে নেওয়া হবে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব।

“কিছু লোক নিরাপদ স্থানে আসতে ব্যর্থ হয়ে ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকবেন। অনেকে ভয়ে ছাদে আশ্রয় নেবেন।”

মহড়ায় চারটি ভবনে কৃত্রিম অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি করা হবে জানিয়ে গোলাম মোস্তফা বলেন, ভবনে অবস্থানকারী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করবেন।

এসেম্বলি পয়েন্টে অবস্থানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেকশন অনুযায়ী সংখ্যা গুণে কোনো ফ্লোরের কেউ বাদ আছেন কি না তা ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন কমান্ডারকে জানাবেন।

ফায়ার সার্ভিস সেখানে গিয়ে ফাস্ট এইড ও কমান্ড পোস্ট স্থাপনের পর প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে উদ্ধার ও আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেবেন।

মহড়ায় অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ফোকাল পারসনদের নিয়ে সভা হয়েছে জানিয়ে সচিব শাহ কামাল বলেন, আগামী ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালনের অংশ হিসেবে এই মহড়া হবে। আগামী ১০ অক্টোবর সদরঘাটেও এ ধরনের মহড়া হবে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খানসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।