এখনও প্রেরণার উৎস গান্ধীর চরকা দিয়ে কাপড় বোনা: মুস্তফা কামাল

মহাত্মা গান্ধী নিজের হাতে চরকা দিয়ে কাপড় বুনে কুমিল্লায় খাদি শিল্পের যে সূচনা করেছিলেন তা মানবসম্পদ উন্নয়নে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে কাজ করে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2016, 02:59 PM
Updated : 1 Oct 2016, 02:59 PM

রাজধানীর ব্রাক সেন্টার ইনে শনিবার ‘মহাত্মা গান্ধীর ১৪৭তম জন্মজয়ন্তি এবং সমাজ পরিবর্তনে যুব সমাজের ভূমিকা ও গান্ধী দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন কুমিল্লার সন্তান কামাল।

গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের আয়োজনে সংগঠনের সভাপতি দেবপ্রিয় ভট্রাচার্যের সঞ্চালনায় ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেক এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি নিক বেরেসফোর্ড অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “গান্ধী ছিলেন একজন মহান দার্শনিক। তিনি নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা বিস্তার এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সমাজের অবহেলিত ও বঞ্চিত শ্রেণির মানুষদের সাথে নিয়ে অহিংস সংগ্রাম করেছেন।

“গান্ধীজি প্রায় শত বছর আগে উপলব্ধি করেছিলেন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়।”

২০০৭ সালের ২ অক্টোবর জাতিসংঘ মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস ঘোষণার বিষয়টি তুলে ধরেন হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।

তিনি বলেন, “মহাত্মা গান্ধীর জীবন দর্শন আজকের যুব সমাজের জন্য প্রযোজ্য।

“বাংলাদেশ ও ভারতে এখন বেশিরভাগ মানুষই যুব। দেশ দুটি একই ভূখণ্ডের বলে ভাষা, সংস্কৃতির অনেক মিল রয়েছে। দুদেশের সমাজ গঠনও একই রকম। মহাত্মা গান্ধীর জীবন ও কর্ম এখানে অবিরাম সৎকর্মে দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে।”

সম্প্রতি নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রম পরিদর্শনের কথা জানিয়ে শ্রিংলা বলেন, “সরকারের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এ আশ্রমে গান্ধীর আদর্শে পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার উন্নয়ন হচ্ছে। এ আশ্রম থেকে লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও কুমিল্লার এক লাখ ২৫ হাজার পরিবার সরাসরি উপকৃত হচ্ছে। আর প্রায় ১২ লাখ পরিবার প্রচ্ছন্নভাবে উপকৃত হচ্ছে।”

যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেক বলেন, “আমাদের প্রতিনিয়ত অর্থনৈতিক সংকট, শরণার্থী, সন্ত্রাস, বৈষম্য, বঞ্চনা, মানবপাচার, নারীর বিরুদ্ধে অপরাধসহ নানা রকম সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বেই লড়তে হচ্ছে।

“আমরা বেকারদের কাজ দিতে পারছি না। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী যুব সমাজ হতাশা থেকে ধর্মান্ধতা নিয়ে বিপথগামী হয়ে সন্ত্রাসে লিপ্ত হচ্ছে।”

দেবপ্রিয় বলেন, “সমাজে যদি সহিংসতা থাকে তাহলে যুব সমাজ কি এর বাইরে থাকবে? এক অন্য সহিংসতার জন্ম দিবে। সহিংসতার বহু ধরন, প্রকার আছে- রাষ্ট্র করে, গোষ্ঠী করে, ব্যক্তি করে, অনেক সময় ধর্ম ধর্মের ওপর করে আবার অনেক সময় অঞ্চল অঞ্চলের প্রতি করে।

“আমাদের সমাধানের জায়গাগুলোকে দেখতে হবে। এসব ক্ষেত্রে গান্ধীজির চিন্তাকে বড়ভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ আছে। কারণ নির্যাতন ও অত্যাচার যদি অব্যাহত থাকে তাহলে এ সহিংসতার সুযোগ থেকে যাবে।”