‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে বাদ পড়া ওই প্রশ্নের কারণে সব পরীক্ষার্থীকেই একটি প্রশ্নের নম্বর দেওয়ার চিন্তা-ভাবনার কথা জানানো হলেও তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ ঢাকার ৫৫টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষা হয়। এবার প্রশ্নপত্রে সেটের নাম না লিখে বারকোড ব্যবহার করা হয়। সেগুলোরই কোনো একটিতে মোট ১০০টি প্রশ্নের জায়গায় ৯৯টি প্রশ্ন ছিল।
গ ইউনিটের পরীক্ষায় ছয়টি বিষয়ের মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, অ্যাকাউন্টিং ও ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক।এর সঙ্গে বিকল্প হিসেবে ছিল ফাইন্যান্স ও মার্কেটিংয়ের যেকোনো একটির বিষয়।প্রতি বিষয়ে ২০টি করে মোট ১০০টি প্রশ্ন। আর প্রতি প্রশ্নের জন্য ছিল ১.২০ নম্বর।প্রতি প্রশ্নের ভুল উত্তরের জন্য ০.২৪ নম্বর কাটা যাবে।
এতে যারা ওই প্রশ্নে উত্তর করেছেন তাদের উদ্বেগের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, যেসব শিক্ষার্থী ওই সেটের প্রশ্নপত্রের উত্তর দিয়েছেন, তাদের সবাইকে ওই প্রশ্নের জন্য নম্বর দেওয়া হবে।
কিন্তু এর ফলে যারা সঠিক সেটের প্রশ্নপত্রে এবং যারা বিকল্প মার্কেটিং বিষয়ে উত্তর দিয়েছেন তারা ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুলের জন্য বৈষম্যের শিকার হওয়ার’ অভিযোগ তুলেছেন।
তাদের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট ওই সেটটি যে সব পরীক্ষার্থীরা পেয়েছিলেন, তারা বাদ পড়া প্রশ্নটির সম্মুখীন না হয়েই ওই প্রশ্নের জন্য নম্বর পেয়ে যাবেন। সেই প্রশ্নে হয়তো কেউ সঠিক উত্তর দিত, কারো হয়তো ভুল হতো, কেউ হয়তো উত্তর এড়িয়ে যেত।কিন্তু প্রশ্ন না থাকায় তারা সবাই তার জন্য নম্বর পাবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নীলক্ষেত হাই স্কুল কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী আসিফ হাসান (আদর) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি বিকল্প হিসেবে ফাইন্যান্স বিষয়ের উত্তর দিয়েছি। আমার সেটে ২০টি প্রশ্নটি ছিল। সেখানে আমি ওই প্রশ্নের উত্তর ভুলও করতে পারি। তাহলে আমার দশমিক ২৪ নম্বর কাটবে।আর যারা উত্তর দেয় নাই তারা সেখানে ১ দশমিক ২০ নম্বর পাবে।
“সেক্ষেত্রে আমার মেধা তালিকায় সেটার প্রভাব পড়বে। এর জন্য হয়তো সিরিয়ালে আমি কয়েক হাজার জনের পেছনে পড়ব।দেখা যাবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি ভর্তি হতে পারলাম না। এর দায় বিশ্ববিদ্যালয়কে নিতে হবে।”
প্রান্ত বড়ুয়া নামে আরেক পরীক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা যারা মার্কেটিং বিষয়ে উত্তর দিয়েছি, তারা ১০০টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি।ফাইন্যান্স বিষয়ের প্রশ্নের একটি সেটের সাত নম্বর প্রশ্নটি নেই।তারা তো একটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়েও নম্বর পাবে।কিন্তু এটা তো খুব খারাপ হবে।”
“ইতিমধ্যে ফাইন্যান্স বিষয়ের পরীক্ষার্থীদের সাধারণভাবে একটি প্রশ্নের নম্বর দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। মার্কেটিং বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নম্বরের বিষয়টি শিগগিরই বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
একটি প্রশ্ন কম থাকা প্রশ্নে যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ওএমআর শিট পূরণ করেছেন ও যারা ওএমআর শিটে ওই প্রশ্নের উত্তর পূরণ করেননি উভয়েই নম্বর পাবেন বলে জানান তিনি।
পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি পরীক্ষকদের জানালে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের ৭ নম্বর প্রশ্নের ঘর ফাঁকা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল বলেও জানান পরীক্ষা কমিটির আহ্বাক শিবলী।
এক হাজার ২৫০ আসনের বিপরীতে ‘গ’ ইউনিটে এবার ৪২ হাজার ১৪৭টি আবেদন পড়ে।