সাংবাদিক এবিএম মূসার স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ

প্রয়াত প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসার বর্ণাঢ্য জীবনের নানা স্মৃতি তুলে ধরে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের লেখা নিয়ে স্মৃতিগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2016, 10:56 AM
Updated : 30 Sept 2016, 11:45 AM

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষক অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সম্পাদিত এবিএম মূসা স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে হলিডে পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ কামালউদ্দিন বলেন, “সাংবাদিকতার বস্তুনিষ্ঠতা সম্পর্কে মূসা ভাই আমাদের যা শিখিয়ে গেছেন, এখন সেটা আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হয়।

“আমরা তার কাছ থেকে শিখেছি, কীভাবে সত্যকে, মানুষকে জানাতে হয়।”

নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মূসা ভাই ছিলেন, আমাদের পথ প্রদর্শক ও শিক্ষক। তিনি ছিলেন, আপোষহীন, সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ। সামরিক সরকারের সময়ে সাহসের সাথে সত্য সংবাদ পরিবেশনায় তার দূরদর্শী বুদ্ধিমত্তা বলে শেষ করা যাবে না। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনায় তার কাজ-কর্ম আমাদের কাছে পাথেয় হয়ে থাকবে।”

সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, “পাছে লোকে কিছু বলে তা নিয়ে কখনোই ভ্রুক্ষেপ করতেন না মূসা ভাই। সহজভাবে অকপটে সত্যকে উচ্চারণ করেছেন সাহসের সাথে।”

পত্রিকার শিরোনাম লেখার ক্ষেত্রে তার মুন্সিয়ানার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমি বলব, তীক্ষ্ণ হেডিং তৈরির দিশারী ছিলেন মূসা ভাই।”

বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “মূসা ভাই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করে গেছেন। তাকে নিয়ে লেখা এই স্মারকগ্রন্থ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।”

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ইটিভির প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, “মূসা ভাই ছিলেন, ব্যবহারিক সাংবাদিকতার শিক্ষক। তিনি সাংবাদিক তৈরি করেছেন হাতে-কলমে শিখিয়ে। তার কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখা আছে, থাকবে।”

সভাপতির বক্তব্যে প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক গোলাম রহমান এবিএম মূসার বর্ণাঢ্য জীবন-কর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে পাথেয় হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি ৩৮/৪০ বছর যাবত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি। সেই হিসেবে আমি বলব, এই সাংবাদিকতার পেশায় যারা রয়েছেন, তাদের আরেকটু বেশি প্রফেশনাল কাজ-কর্ম করার চেষ্টা করতে হবে। কেন জানি না, আমি বিএফইউজে হোক, ডিইউজে হোক, প্রেস ক্লাব হোক তাদের পক্ষ থেকে খুব বেশি প্রফেশনাল কর্মকাণ্ড দেখি না।”

সাংবাদিক কবি হাসান হাফিজের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, প্রবীণ ক্রীড়া সাংবাদিক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, সাংবাদিক এইউএম ফখরুদ্দিন, রয়টার্সের আলোকচিত্রী এবিএম রফিকুর রহমান, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমা হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, মাওলা ব্রাদাসের প্রকাশক আহমেদ মকসুদুল হক, প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মূসার মেয়ে সাংবাদিক পারভীন সুলতানা মূসা ঝুমা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক সাখাওয়াত আলী খান ও প্রয়াত সাংবাদিকের স্ত্রী সেতারা মূসাও উপস্থিত ছিলেন।

২০১৪ সালে ৮৩ বছর বয়সে প্রখ্যাত সাংবাদিক এবিএম মূসা মারা যান। তাকে নিয়ে লেখা ৩২০ পৃষ্ঠার স্মারকগ্রন্থ নিয়ে এ বি এম মূসা-সেতারা মূসা ফাউন্ডেশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।