মিলাদ ও খাবার বিতরণে পালিত শেখ হাসিনার জন্মদিন

সৈয়দ শামসুল হকের মৃত‌্যুতে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে দেশব‌্যাপী দোয়া মাহফিল এবং এতিমদের মধ্যে উন্নত খাবার বিতরণের মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিন পালিত হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2016, 01:24 PM
Updated : 28 Sept 2016, 01:24 PM

মঙ্গলবার সব‌্যসাচী লেখক সৈয়দ হকের মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শেখ হাসিনা তার জন্মদিনে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো সব কর্মসূচি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ঊনসত্তর বছর পেরিয়ে বুধবার সত্তরের কোটায় পা রাখলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

গত কয়েক বছরের মতো এবারও জন্মদিনে দেশের বাইরে ছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জন্মদিন কাটে তার।

শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বুধবার সকালে কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা এহসানুল হক।

 মোনাজাতে সব ধরনের ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে হেফাজতে রাখতে দোয়া এবং সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদেরও রূহের মাগফেরাত কামনাও করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন জানান, সরকার প্রধানের জন্মদিন উপলক্ষে গেন্ডারিয়ায় আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের এতিমখানা এবং আজিমপুরের ছোটমণি নিবাসে উন্নত খাবার বিতরণ করা হয়।

বাদ আছর গণভবনে মিলাদ হয়। এতে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, হাছান মাহমুদ, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব নূর-ই-এলাহী মিনা উপস্থিত ছিলেন।

মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও দরিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবলীগ, তাঁতী লীগ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে মিলাদের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মিলনায়তনে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উদ্যোগে খেলার সামগ্রী বিতরণ করে।

জাতীয় মন্দির ঢাকেশ্বরী মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

তবে নির্দেশনা উপেক্ষা করে আলোচনা অনুষ্ঠান করে সহযোগী সংগঠন যুবলীগ।

দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও আলোচনা সভা করা হবে কি না- জানতে চাইলে মঙ্গলবার রাতে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাব। পাশাপাশি আলোচনা সভায় উনার (সৈয়দ হক) মিলাদের অনুষ্ঠানও করব। আমরা দুটি অনুষ্ঠান একত্রে করে ফেলেছি।”

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের প্রথম সন্তান শেখ হাসিনার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ তিন মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বে দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসে দলটি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠিত হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুযারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।