জন্মস্থানে শেষ ঘুমে লেখক সৈয়দ হক

শেষ ইচ্ছা অনুসারে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের দাফন হয়েছে তার জন্মস্থান কুড়িগ্রামে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2016, 11:49 AM
Updated : 28 Sept 2016, 02:08 PM

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত সৈয়দ হকের মরদেহ বুধবার বিকালে হেলিকপ্টারে করে তার নিজের জেলা কুড়িগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে মাঠে হেলিকপ্টার থেকে কফিন নামানোর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ তাদের প্রিয় এ্ই মানুষটির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।

কলেজ মাঠে বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে সৈয়দ হকের জানাজায় অংশ নেয় হাজারো মানুষ। কলেজে মসজিদের দক্ষিণ দিকে মাঠ সংলগ্ন ধানক্ষেতের পাশে বিকাল ৫টায় তাকে দাফন করা হয়, যে জায়গায় শায়িত হওয়ার ইচ্ছার কথা তিনি জানিয়ে গিয়েছিলেন।

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

কবিপুত্র দ্বিতীয় সৈয়দ হক তুর্য জানাজার আগে বলেন, “জলেশ্বরী (নদী), আজ তোমার ছেলে ফিরে এসেছে তোমার কাছে। হৃদয়ের কাছে। ভালবাসার কাছে। প্রিয় জন্মভুমির কাছে।”

প্রধানমন্ত্রী ও সংস্কৃতি মন্ত্রীকে তিনি ধন্যবাদ জানান তার বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণে সহায়তা করার জন্য। সেই সঙ্গে কুড়িগ্রামবাসীর প্রতি জানান কৃতজ্ঞতা।

কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাফর আলী জানান, গত বছর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সৈয়দ হক এই মাটিতেই শায়িত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ‌্যোগ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় অনুমতি দেয়।

১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম শহরের থানা পাড়ায় সৈয়দ শামসুল হকের জন্ম। ফুসফুসের ক‌্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত‌্যু হয় তার।

সৈয়দ হকের বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হক এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

সৈয়দ শামসুল হক

প্রিয় জায়গায় কবরের সম্মতি মেলায় গত ১১ মার্চ কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং কুড়িগ্রামবাসীকে ধন‌্যবাদ জানিয়ে একটি চিঠি লেখেন সৈয়দ হক।

সেখানে তিনি লেখেন, “আমার ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে আপনারা যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, এতে আমি আনন্দিত এবং আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার জন্মস্থান আমার শেষ ঘর হবে। এটা যে আমার বহু দিনের ইচ্ছা, আমার পরিবার পরিজনও সেভাবে প্রস্তুত। তারাও আপনাদের সিদ্ধান্তে আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। আমার সশ্রদ্ধ সালাম রইল।”