কোটালিপাড়ায় পুঁতে রাখা বোমার মামলায় মুন্সি আতিকের সাক্ষ্য শুরু

ষোল বছর আগে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশে ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে রাখার মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেছেন তদন্ত কর্মকর্তাদের একজন সিআইডির সাবেক সহকারী সুপার মুন্সি আতিকুর রহমান।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2016, 05:19 PM
Updated : 27 Sept 2016, 05:19 PM

ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম মঙ্গলবার তার সাক্ষ্য নেন।

এ ট্রাইব্যুনালের পেশকার কামাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মুন্সি আতিক এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৬৩তম সাক্ষী।

সাক্ষী হিসাবে জবানবন্দিতে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মানচিত্র, সূচিপত্র তৈরি করা, মামলার তদন্তভার কার কাছ থেকে কিভাবে পেলেন এ সম্পর্কে বিবরণ দেন।

তবে জবানবন্দি দেওয়ার মাঝখানে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মুন্সি আতিকের সাক্ষ্য মূলতবী করে বিচারক আগামী ৪ অক্টোবর তার অবশিষ্ট সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য দিন রাখেন বলে জানান কামাল হোসেন।

এর আগে গত ১৪ অগাস্ট সাক্ষ্য দেওয়ার সময় যথাযথ প্রস্তুতি না থাকায় মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা বর্তমানে অবসরে যাওয়া পুলিশ পরিদর্শক মীর মহিউদ্দিনকে ভৎসর্না করেছিলেন ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক।

পরে গত ২১ অগাস্ট তারিখে ফের তার সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী ৮৯ জন।

শেখ হাসিনার ভাষণের জন্য মঞ্চ নির্মাণের সময় ২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি দোকানের সামনে থেকে পুঁতে রাখা ৭৬ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।

এর দুই দিন পরে ওই মহাবিদ্যালয়ের মাঠে একটি জনসভায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেয়ার কথা ছিল।

এ ঘটনায় কোটালিপাড়া থানার এসআই নূর হোসেন বাদী হয়ে থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এ মামলা করেন।

তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল, তাতে আসামি করা হয় ১৬ জনকে। পরে ২০০৯ সালের ২৯ জুন নতুন করে ৯ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

গোপালগঞ্জের আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্রটি যখন দেওয়া হয়, তখন রাষ্ট্রপক্ষে ৮৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪১ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়ে গিয়েছিল।

পরে তখনকার বিচারিক আদালতের বিচারক গোলাম মুরশেদ ওই ৪১ সাক্ষীকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আবার ডাকেন।

তবে জনগুরুত্বসম্পন্ন, স্পর্শকাতর ও আলোচিত হওয়ার কারণে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপালগঞ্জের আদালত থেকে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে বর্তমানের ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয় মামলার নথি।

২ নম্বর ট্রাইব্যুনালে ২০১২ সালের ১ অগাস্ট থেকে ২০১৫ সালের ১৯ অগাস্ট পর্যন্ত দুই বছরে এ মামলায় তারিখের পর তারিখ চলে গেলেও আর কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর অবহেলা ও সাক্ষী আনায় ব্যর্থতাসহ বেশ কয়েকদিন এ আদালতের বিচারকের অনুপস্থিতির কারণে মামলাটির বিচারকাজ থেমে গিয়েছিল।

এ মামলায় ২৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নানসহ নয় আসামি কারাগারে, একজন জামিনে এবং ১৫ জন পলাতক রয়েছে।

এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মুন্সি আতিক একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার দুই মামলার আসামি।