কমছে নাট্যদল, কমছে নাট্যচর্চা: সংস্কৃতিমন্ত্রী

সারা দেশে নাট্যচর্চা বিস্তারে নানা উদ্যোগ, বিশেষ অনুদান প্রদানের পরও ক্রমাগত হারে নাটকের দল কমে যাওয়ার পাশাপাশি নাট্যচর্চার বেহাল দশায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2016, 03:26 PM
Updated : 24 Sept 2016, 03:26 PM

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় নাট্যোৎসব উদ্বোধন করতে এসে মন্ত্রী একইসঙ্গে নাট্যোৎসবে পুরনো নাটক মঞ্চায়নের বিপক্ষেও নিজের ক্ষোভের কথা জানান।

“নাট্যোৎসবগুলোতে প্রায় সবগুলোই পুরনো নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। এরপরে যে নাট্যোৎসব হবে, সেখানে ৩০ শতাংশ নাটক হতে পারে পুরনো নাটক, বাকিগুলো হতে হবে নতুন নাটক।  পুরনো নাটকগুলোর মধ্যে যেগুলো ক্ল্যাসিক্যাল কেবল সেসব নাটকই উৎসবে প্রদর্শিত হতে পারে।”

দেশের প্রতিটি জেলায় শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চ থাকলেও নাট্যদলগুলো সেই মঞ্চ ব্যবহার করছে না জানিয়ে উৎসব আয়োজনের পাশাপাশি দেশের নাট্যচর্চা নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ ও পরিকল্পনা নেওয়ার আহ্বানও জানান সংস্কৃতিমন্ত্রী।

এবারের জাতীয় নাট্যোৎসবে সারা দেশের ৫৮টি দলের ৫৮টি নাটকের অধিকাংশই পুরনো।  জাতীয় নাট্যোৎসবে নতুন নাটক মঞ্চস্থ হলে সে উৎসবটি ‘বৈশিষ্ট্যপূর্ণ’ হয় বলে মন্তব্য করেছেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।

নাটকের দলগুলোকে অনুদানের ব্যাপারে অগ্রজ এই নাট্যব্যক্তিত্ব বলেন, “প্রতি বছর ২০০টি নাটকের দলকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া বন্ধ করে,  ৫০টি নাটকের দল নির্বাচন করে তাদের  দুই লাখ টাকা করে অনুদান দিলেই হয়।  পরের বছর আবার ৫০টি দলকে নির্বাচন করে অনুদান দেওয়া হল। এতে নাটকের দলগুলো উৎসাহ পাবে।”

একইসঙ্গে নাট্যচর্চার আদিক্ষেত্র মহিলা সমিতির মঞ্চটিকে আবারো নাট্যচর্চার উপযোগী করে গড়ে তোলার অনুরোধ করেন তিনি।

নাট্যব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বলেন, “নানা সঙ্কটের মুখে পড়েও বাংলাদেশের নাট্যচর্চায় কখনও ব্যতয় ঘটেনি।”

সংস্কৃতিসচিব আকতারী মমতাজ বলেন,  “মানবিক বাংলাদেশ নির্মাণে সমাজ বদলের হাতিয়ার নাটককে নিয়ে যেতে হবে গ্রামে-গঞ্জে।  শুধুমাত্র নাগরিক আয়োজনে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না।”

এছাড়াও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নাট্যচর্চা নিয়ে বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

উদ্বোধনী দিনে জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে হবিগঞ্জের নাটকের দল জীবন সংকেত মঞ্চস্থ করে নাটক ‘জ্যোতিসংহিতা’, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সিরাজগঞ্জের নাট্যলোক ‘নারী নসিমন’, মহিলা সমিতির মঞ্চে গাইবান্ধার পদক্ষেপ মঞ্চায়ন করে ‘পলোনাথ কোম্পানি’।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে নাগরিক নাট্যাঙ্গন মঞ্চস্থ করবে ‘গহর বাদশা ও বানেসা পরী’, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে কুষ্টিয়ার বোধন থিয়েটার মঞ্চস্থ করবে ‘চন্দ্রাবতী কথা’,  মহিলা সমিতির মঞ্চে কিশোরগঞ্জের একতা নাট্যগোষ্ঠী মঞ্চস্থ করবে নাটক ‘মহুয়া’।

এবারের নাট্যোৎসবে প্রতি শুক্র ও শনিবার মঞ্চস্থ হবে ঢাকার বাইরের নাট্যদলগুলোর নাটক। থাকছে নাটকের কর্মশালা।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত উৎসবটি চলবে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত।