গুলশান হামলায় আকাশের সম্পৃক্ততা মেলেনি: পুলিশ

সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা ফেনীর অস্ত্র মামলার আসামি পিয়ার আহমেদ আকাশের সঙ্গে গুলশান হামলার কোনো যোগসূত্র এখনও পাওয়া যায়নি বলে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া জানিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2016, 10:46 AM
Updated : 24 Sept 2016, 10:46 AM

রাজধানীর তেঁজগাওয়ে বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) মিলনায়তনে শনিবার এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

আছাদুজ্জামান বলেন, “মালয়েশিয়ার পত্রিকায় কী উঠেছে জানি না। তবে আমাদের তথ্যপ্রমাণ যেটা রয়েছে, সেটা হচ্ছে হলি আর্টিজানের ঘটনার সঙ্গে পিয়ার আহমেদ আকাশের কোনো ধরনের যোগসূত্র এখন পর‌্যন্ত পাইনি।

“আন্তর্জাতিক পত্রিকায় তাকে নিয়ে যেসব খবর এসেছে, সেগুলো আমরা যাচাই করে দেখব। পিয়ারের জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে জানাননি।”

সন্ত্রাসবাদে জড়িত সন্দেহে ১৯ অগাস্ট এক বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ মালিককে গ্রেপ্তারের পর ২ সেপ্টেম্বর তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান দেশটির পুলিশ মহাপরিদর্শক খালিদ আবু বকর।

২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন আকাশ (সবার ডানে)

শুক্রবার মালয়েশিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির ইংরেজি দৈনিক স্টারের অনলাইন সংস্করণে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৯ বছর বয়সী এই বাংলাদেশি কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাংয়ে একটি রেস্তোরাঁ চালাতেন। ঢাকার গুলশান হামলায় জড়িতদের একজনের সঙ্গে তার সাক্ষাৎও হয়েছিল। 

মালয়েশিয়ার পুলিশ তার নাম প্রকাশ না করলেও ইন্টারপোলের নোটিসের কথা জানিয়েছিল। আর তিনিই যে ফেনীর আকাশ, তা নিশ্চিত করেছে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ।

স্টার অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বাংলাদেশি গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় জড়িত যে সন্দেহভাজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন বলা হচ্ছে, তার নাম আন্দালিব আহমেদ।

গত ১৯ অগাস্ট গ্রেপ্তারের পর এই ছবি প্রকাশ করে মালয়েশিয়ার পুলিশ

মোনাশ ইউনিভার্সিটির মালয়েশিয়া ক‌্যাম্পাসের সাবেক ছাত্র আন্দালিব ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় থাকার পর ইস্তাম্বুলে পাড়ি জমান বলে জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।   

গত ১ জুলাই গুলশানে নজিরবিহীন সেই জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত‌্যা করে জঙ্গিরা। পরদিন ভোরে কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হন, যাদের একজনের নাম আন্দালিব আহমেদ বলে সে সময় ফেইসবুকে আলোচনা শুরু হয়। তবে পরে পুলিশ নিশ্চিত করে, নিহতদের মধ‌্যে কেউ আন্দালিব নন।

মালয়েশিয়ার পত্রিকা যে আন্দালিবের কথা বলছে, তিনি অন‌্য কেউ কি-না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রধান ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, “আপনারা জানেন পিয়ার আহমেদ আকাশ ফেনী জেলার একটি অস্ত্র মামলার আসামি ছিল। সে আরও ৪/৫ বছর আগে মালয়েশিয়াতে চলে যায় এবং সেখানে তার বিরুদ্ধে আমাদের ওয়ারেন্ট ছিল।

“আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছিল। সেই রেড নোটিসের আলোকেই তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

গুলশানের ক্যাফেতে হামলাকারী পাঁচ জঙ্গি ও সেখানকার শেফ সাইফুল ইসলাম চৌকিদারের লাশ কেউ দাবি না করায় ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে আইন অনুযায়ী দাফন করা হয়েছে বলে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার জানান।

তিনি বলেন, “হলি আর্টিজেনের ঘটনা ঘটেছিল পহেলা জুলাই; দুই মাস ২৪ দিন আগে। এই ছয় জনের পক্ষ থেকে কেউ পুলিশের কাছে লাশ বুঝে নিতে আবেদন করেননি।”