রিজার্ভের অর্থ ফেরত নিশ্চিত করতেই রিপোর্ট প্রকাশে দেরি: আইনমন্ত্রী

বাংলাদেশের চুরি যাওয়া রিজার্ভের অর্থ ফিলিপিন্সের কাছ থেকে ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ায় যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে তা নিশ্চিত করতেই এ ঘটনায় সরকারের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2016, 08:42 AM
Updated : 24 Sept 2016, 09:21 AM

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে ‘অর্থমন্ত্রীকে অপেক্ষার করার পরামর্শ দেওয়ার’ বিষয়ে জানতে চাইলে শনিবার সচিবালয়ে সংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী।

আনিসুল বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। সেজন্য আমরা খুব সতর্কতার সাথে সব বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছি।

“যেহেতু চুরি যাওয়া অর্থে ফেরত পেতে একটা মামলা ফিলিপিন্সে চলছে, সেই অর্থটা ফেরত পাওয়াতে ব্যাঘাত ঘটে এমন কিছু আমরা হতে দিতে চাই না। সেই ক্ষেত্রে ওই (তদন্ত) রিপোর্টের আগে ওই মামলাটা নিষ্পত্তি হলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে।

“সেক্ষেত্রে আমরা মনে করেছি কয়েকটা দিন পরে এই রিপোর্ট পাবলিশ করলে বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ন থাকবে।”

রিজার্ভের অর্থ ফিরিয়ে আনার পর কারা তা চুরিতে সাহায্য করেছে এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত তা বের করা প্রয়োজনীয় বলেও মনে করেন আইনমন্ত্রী।

“কিন্তু সম্পদটা ফিরিয়ে আনাটা অগ্রাধিকারের ব্যাপার।”

গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার।

শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে।

বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান; কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল।

ওই সময়ই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলা করা হয়। ১৫ মার্চ সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে।