আমি প্রার্থী নই: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সংবাদমাধ‌্যমে নাম আসার পর সভাপতিমণ্ডলীর সদস‌্য ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিনি দলের জাতীয় সম্মেলনে ‘কোনো পদেই প্রার্থী নন’।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2016, 08:40 AM
Updated : 19 Sept 2016, 07:11 PM

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের বলেন, “আমাদের পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই। কে কী পেল তা নিয়ে মান অভিমান থাকতে পারে, এখানে নেত্রীর উপর আস্থা রয়েছে শতভাগ। আমরা সবাই তার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল।”

আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা, যার মধ‌্য দিয়ে পরবর্তী তিন বছরের জন‌্য নতুন নেতৃত্ব ঠিক করবে ক্ষমতাসীন দলটি। 

কাদের বলেন, “আমি আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ি, মাঝে মাঝে লজ্জাও পাই। সেটা হচ্ছে সম্মেলনকে সামনে রেখে নানা আলাপ আলোচনা আসে। পত্রিকায় ছবি বের হয়… ওমুকের প্রতিদ্বন্দ্বী। আমি আপনাদের স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমি আওয়ামী লীগের কোনো পদে প্রার্থী নই।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত সপ্তমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে এবার সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বদলে অন‌্য কাউকে বেছে নেওয়া হবে কি না- সে সম্ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়।

এসব প্রতিবেদনে নিজের নামও দেখার কথা জানিয়ে কাদের বলেন, “আমি বিব্রত বোধ করি… পাশাপাশি কয়েকজনের ছবি প্রকাশ হয়, এর মধ্যে আমার ছবি, সত্য করা বলতে কী এই ছবি দেখে অনেকে বলে ছবি এসেছে লিডার আমরা খুশি… আমার মনটা তখন বিষণ্ন হয়ে যায়, তখন ওই রিপোর্টের কারণে কাগজটি পড়ি না।”

দলীয় সম্মেলনে এভাবে ‘প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে’ না দিতে সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

“আমাদের পার্টি আমাদের নেত্রী যা চাইবে, নেতা-কর্মীরা তাই চাইবে। এখানে কোনো ভিন্নমত থাকবে না। নেত্রীর চাওয়ার বাইরে কিছু নেই।

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বন্দি হওয়ার প্রেক্ষাপটে দলে সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের ভার আসে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী সৈয়দ নজরুলের ছেলে আশরাফের উপর। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদেরের নাম তার আগে আলোচিত হলেও তার ভাগ্যে সিকে ছেঁড়েনি।

মন্ত্রী হিসাবে কাজের ধরণ নিয়ে বছর দুই আগে আওয়ামী লীগের এ দুই নেতার মধ্যে তীর্যক মন্তব্য বিনিময় হলে বিষয়টি গণমাধ্যমে নতুন আলোচনার জন্ম দেয়। অবশ‌্য কাদের এখন বলছেন, তার কোনো ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই’।

“কাকে কখন কী করতে হবে তার (নেত্রী) চেয়ে বেশি কেউ জানেন না। কাজেই আমাকে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা- প্রার্থিতার আসরে টেনে নিয়ে বিব্রত করবেন না।… আমি যেভাবে আছি নেত্রী যদি সেভাবেই রাখেন তাহলে আমি এতেই খুশি।”

এর আগে ২০০২ সালের সম্মেলনের সময় ‘নেত্রীর নির্দেশে’ সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়েছিলেন দাবি করে কাদের বলেন, “জলিল ভাই যখন সেক্রেটারি ছিলেন।… সম্মেলনের আগের দিন জলিল ভাই তখন হাসপাতালে, নেত্রী আমাকে বললেন হাসপাতালে গিয়ে জলিল ভাইকে বল তুমি ক্যান্ডিডেট নও।

“এরপর আর কখনো আওয়ামী লীগের কোনো পদের জন্য আমার প্রার্থিতা ছিল না, মন্ত্রী হওয়ার জন্য কোনো লবিং ছিল না; আমি করিনি, কারণ আমার ধাতে নেই।”

অন‌্যদের মধ‌্যে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ এই ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।