কবি শহীদ কাদরীর মরদেহ ঢাকায়

কবি শহীদ কাদরীর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার মরদেহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে নিয়ে আসা হয়েছে দাফনের জন‌্য।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2016, 05:58 AM
Updated : 31 August 2016, 06:09 AM

জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ জানান, রাষ্ট্রীয় ব‌্যবস্থাপনায় বুধবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে কবির মরদেহ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

সামাদ বলেন, কবির মরদেহ গ্রহণ করার সময় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সংস্কৃতি বিভাগের কর্মকর্তারা এবং জাতীয় কবিতা পরিষদ ও সম্মিলত সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ভোরে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শহীদ কাদরীর স্ত্রী নীরা কাদরী, ছেলে আদনান কাদরী এবং পারিবারিক বন্ধু সাবিনা হাই উর্বি ঢাকা পৌঁছান।

বিমানবন্দর থেকে কবির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বারিধারায় তার বড় ভাইয়ের বাসায়। সেখান থেকে কফিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছালে শুরু হয় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব। সবার প্রথমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে।

 সম্মিলত সাংস্কৃতিক জোটের উদ‌্যোগে এই শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান শেষে কবির কফিন নিয়ে যাওয়া হবে বাংলা একাডেমিতে। দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হবে জানাজা।

পরে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন কবি শহীদ কাদরী, যিনি প্রায় চার দশক আগে দেশ ছেড়ে প্রবাস জীবন বেছে নেন।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন শহীদ কাদরী। গত পাঁচ বছর ধরে হুইল চেয়ারে ছিল তার চলাফেরা। সম্প্রতি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি। রোববার নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান ৭৪ বছর বয়সী এ কবি।

১৯৪২ সালের ১৪ অগাস্ট কলকাতায় জন্ম নেওয়া শহীদ কাদরী সাতচল্লিশে দেশভাগের পর বাংলাদেশে আসেন। ১৯৭৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশের বাইরে তিনি; জার্মানি, ইংল্যান্ড হয়ে ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন।

পঞ্চাশোত্তর বাংলা কবিতায় আধুনিক মনন ও জীবনবোধ সৃষ্টিতে যে কজন কবি উল্লেখযোগ্য তাদের মধ্য অন্যতম শহীদ কাদরী।

আধুনিক নাগরিক জীবনের সুখ-দুঃখ, প্রেম, স্বদেশচেতনার পাশাপাশি বিশ্ব-নাগরিক বোধের সম্মিলন ঘটে তার কবিতায়।

‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোন ক্রন্দন নেই’ ও ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ এই চারটি কাব্যগ্রন্থ দিয়েই বাংলার জনপ্রিয় কবিদের একজন শহীদ কাদরী। ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি ও ২০১১ সালে তাকে একুশে পদক দেওয়া হয়।