যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর রিভিউ রায় খারিজের পর মঙ্গলবার রাতে প্রচারিত ওই আলোচনা অনুষ্ঠানের অডিও, ভিডিও ও ট্রান্সক্রিপ্ট আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে দাখিল করতে হবে।
টেলিভিশন স্টেশনের সিইও বা প্রযোজককে ওই সময়ের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরে সেগুলো জমা দিতে বলা হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বুধবার বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আদালত বসার পর অ্যাটর্নি জেনারেল দাঁড়িয়ে সময় টিভির সেই টকশোর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিনি বলেন, “এই আদালত, ট্রাইব্যুনাল ও মীর কাসেমের রায় নিয়ে টকশোতে যে সব আলোচনা হয়েছে, তা অবমাননাকর কি-না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।”
এ সময় আদালত ওই টেলিভিশন স্টেশনের নাম জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ‘সময় টিভি’।
আপিল বিভাগে এ মামলার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন, যা আলোচনার জন্ম দেয়। এরপর রিভিউ শুনানিতেও এ বিষয়ে কথা হয়।
গত রোববার রিভিউ শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনালে মীর কাসেমের মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে যারা যুক্ত ছিলেন এবং যিনি তাদের দায়িত্ব দিয়েছেন (প্রধান প্রসিকিউটর), তাদের ওই দায়িত্বে থাকা ‘উচিত নয়’ বলে প্রধান বিচারপতি মত দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রিভিউ রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যে দুই অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে কাসেমের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল, তার একটিতে তিনি আপিলে খালাস পেয়ে যান প্রসিকিউটার ও তদন্ত সংস্থার কারণে।
মঙ্গলবার রাত ১০টায় সময় টিভির নিয়মিত আলোচনা অনুষ্ঠান ‘সম্পাদকীয়তে’ এসব বিষয় আলোচনায় আসে, যা বুধবার সকালে পুনঃপ্রচার করা হয়।
তাদের মঙ্গলবারের আলোচনা অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল “যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং ‘কাঠগড়ায়’ প্রসিকিউশন”। সঞ্চালনায় ছিলেন সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়ের।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক স্বপন দাশগুপ্ত।
সাংবাদিক স্বপন দাশগুপ্ত দীর্ঘদিন ধরে আইন বিষয়ে সাংবাদিকতা করেছেন। তিনি আইন সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সভাপতি।