মঙ্গলবার রায়ের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, “আমাদের সব উদ্বেগের অবসান ঘটেছে।”
একাত্তরে অপহরণ, নির্যাতন, হত্যার মত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের শুরার সদস্য মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, যা এ বছর ৮ মার্চ আপিলের রায়েও বহাল থাকে।
কাসেম ওই রায় পুনর্বিবেচনার যে আবেদন করেছিলেন, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার তাও খারিজ করে দেয়।
দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তিতে সবচেয়ে বেশি লেগেছে। অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ সময় পেয়েছেন তিনি।
এ মামলার বিচারের মধ্যেই মীর কাসেম দণ্ড এড়াতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আপিল বিভাগের শুনানিতে ‘লবিংয়ের জন্য’ কাসেমের ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয়ের কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেন।
আপিল বিভাগে এ মামলার শুনানির সময় প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষের বিষয়টি আলোচনার জন্ম দেয়। আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার শুনানি পেছাতেও বার বার চেষ্টা করতে দেখা যায় আসামিপক্ষকে।
শেষ পর্যন্ত গত ২৪ ও ২৮ অগাস্ট দুই দিন রিভিউ শুনানি নিয়ে ৩০ অগাস্ট রায়ের তারিখ ঠিক করে দেয় আপিল বিভাগ। আর রায়ের ঠিক আগের দিন সোমবার এক অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আমি ভেতরে ভেতরে খুব উদ্বিগ্ন। আগামীকালের জন্য। অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।”
মঙ্গলবার রায়ের পর সাংবাদিকরা তার কাছে ওই মন্তব্যের কারণ জানতে চান।
জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, “আমি প্রথমেই বলেছি, একজন আইনজীবী হিসেবে আমি এই মামলা পরিচালনা করেছি। মামলাটি পরিচালনার পরিপ্রেক্ষিতে এটা রায়ের জন্য ছিল। আমার তো উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক।
“কী রায় হয়… অন্য যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে মৃত্যুদণ্ড যেভাবে বহাল ছিল, এটা বহাল না থাকলে সমগ্র জাতি এবং আমি হতাশ হতাম। সে কারণেই উদ্বেগ”
সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার একটি বক্তব্য ধরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা সভা ডেকে প্রতিবাদ জানালে তখন আ্যাটর্নি জেনারেল মীর কাসেমের রিভিউ শুনানির সময়টিতে অন্য বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন।
সোমবার পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় অ্যাটর্নি জেনারেল যখন উদ্বেগের কথা বলছিলেন, তখন দর্শকসারিতে আইনজীবীদের প্রাধান্য ছিল।
মাহবুবে আলম ওই অনুষ্ঠানে আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “গত পরশু (শুনানির সময়) সবাই যেভাবে উপস্থিত ছিলেন, আগামীকালও উপস্থিত থাকবেন। আপনাদের উপস্থিতিটাই বিরাট প্রতিবাদ।”