সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ জানান, বুধবার সকালে কবির মরদেহ নিউ ইয়র্ক থেকে দেশে পৌঁছানোর পর শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে সেখানে সামাজিক-রাজনীতিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
রোববার নর্থ শোর বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শহীদ কাদরী। উচ্চ রক্তচাপ ও জ্বর নিয়ে সাত দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন কবি শহীদ কাদরী। গত পাঁচ বছর ধরে হুইল চেয়ারে চলছিল তার চলাফেরা।
শহীদ কাদরীর ইচ্ছাতেই তার মরদেহ বাংলাদেশে আনা হচ্ছে বলে কবির স্ত্রী নীরা কাদরী জানিয়েছেন। সোমবার স্থানীয় সময় রাতে কবির মরদেহ দেশে পাঠানো হবে। দুবাই হয়ে তা বুধবার সকালে দেশে এসে পৌঁছাবে।
কবিকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। তবে বুধবারই তাকে সমাহিত করা হবে কি না নিশ্চিত করতে পারেননি জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
“আমরা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কবির ও তার পরিবারের ইচ্ছানুযায়ী মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফনের অনুমতিও চেয়েছি আমরা। সেদিনই তাকে সমাহিত করা হবে কি না- তা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা চলছে।”
পঞ্চাশ পরবর্তী বাংলা কবিতায় আধুনিক মনন ও জীবনবোধ সৃষ্টিতে যে কজন কবি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অন্যতম শহীদ কাদরী। আধুনিক নাগরিক জীবনের সুখ-দুঃখ, প্রেম, স্বদেশচেতনার পাশাপাশি বিশ্ব-নাগরিক বোধের সম্মিলন ঘটে তার কবিতায়।
‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’ ও ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ এই চারটি কাব্যগ্রন্থ দিয়েই বাংলার জনপ্রিয় কবিদের একজন শহীদ কাদরী। ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি ও ২০১১ সালে তাকে একুশে পদক দেওয়া হয়।
১৯৪২ সালের ১৪ অগাস্ট কলকাতায় জন্ম নেওয়া শহীদ কাদরী সাতচল্লিশে দেশভাগের পর বাংলাদেশে আসেন। ১৯৭৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশের বাইরে তিনি; জার্মানি, ইংল্যান্ড হয়ে ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন।