তদন্ত কমিটির প্রধান ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক অজিত কুমার ভৌমিক সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।”
গত ২১ অগাস্ট নয় তলা বসুন্ধরা সিটির ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগলে সি ব্লকের ৯৯টি দোকান মালামালসহ পুড়ে যায়। আগুনের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঠিক ওপরের ফ্লোর অর্থাৎ সপ্তম তলার সি ব্লকের দুটি মেগাশপ।
দুই দিনের চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নেভানোর পর ২৩ অগাস্ট ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয় ফায়ারসার্ভিস। তার আগেই অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
এ কমিটির অপর সদস্যরা জলেন- ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও মামুন মাহমুদ, সিনিয়র স্টেশন অফিসার তানহারুল ইসলাম ও শাহজাদী সুলতানা।
তদন্তের আগ্রগতি জানতে চাইলে কমিটির প্রধান অজিত কুমার সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ পর্যন্ত মোট ১৩ জনের সঙ্গে তারা কথা বলেছেন। এদের মধ্যে দুজন ওই শপিং মলের দোকান মালিক, বাকিরা বসুন্ধরা সিটির অগ্নিনির্বাপন কর্মী ও নিরাপত্তাকর্মী।
“দোকানমালিকদের সঙ্গে আরও কথা বলা দরকার। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা এখনও সম্ভব হয়নি।”
অজিত কুমার বলেন, সি ব্লকের ৬০ নম্বর জুতার দোকানের সিলিং থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে তারা জানতে পেরেছেন।
আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণ জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মো. আলী আহম্মেদ খান বলেন, কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কারণে ধোঁয়া ছড়িয়ে যায়। আর আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে দোকানদাররা দোকান বন্ধ করে যাওয়ার আগুনের ব্যপ্তি বেড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নেভাতে সমস্যা হয়।
দোকান খোলা থাকলে আগুন নেভাতে সুবিধা হত বলে মন্তব্য করেন মহাপরিচালক।
অজিত কুমার বলেন, সিলিং এর উপরে বৈদ্যুতিক তার ছিল। তারগুলো আলাদা কোনো ট্রের উপরে ছিল না। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়।
শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বলতে পারব।”
বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং এম এম জসিমউদ্দিন জানান, কেন্দ্রীয় শীতাতপ যন্ত্র (এসি) মেরামতের কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও শপিং মল খুলতে দেরি হচ্ছে।
“আরও দুই-এক দিন লাগতে পারে এসির কাজ শেষ হতে। আশা করি বৃহস্পতিবার শপিং মল খুলে দিতে পারব।”
আগুনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি কাজ করছে। কাজ শেষ হলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
অগ্নিকাণ্ডের দিন ৭০ নম্বর দোকান খন্দকার সুজ থেকে আগুন লাগার কথা বলা হলেও তদন্ত কমিটি এখন ৬০ নম্বর দোকান স্মার্ট সুজ এর কথা বলছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বসুন্ধরা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এম এম হান্নান আজাদ বলেন, “প্রাথমিকভাবে বোঝা মুশকিল ছিল।”
তিনি জানান, সপ্তম তলার পুরো সি ব্লকে দুটি মেগা শপই কেবল ছিল। ওই ব্লকে আর কোনো দোকান নাই। দুটো দোকানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“যাদের দোকান পুড়েছে তাদেরতো ক্ষতি হয়েছেই। কিন্তু নয় দিন ধরে যে মার্কেট বন্ধ, তাতে আমাদেরওতো ক্ষতি হচ্ছে।”