টাকা শোধের শর্তে সময় পেল সিটিসেল

সরকারের পৌনে পাঁচশ কোটি টাকার বকেয়া শোধ করার জন‌্য সর্বোচ্চ আদালতের কাছ থেকে দুই মাস সময় পেয়েছে বন্ধের প্রক্রিয়ার একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে আসা বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2016, 06:14 AM
Updated : 8 Sept 2016, 06:43 AM

আদালতের এই নির্দেশনার মাধ্যমে টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে বাংলাদেশের একমাত্র এই সিডিএমএ অপারেটর।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির করা এক আবেদনের নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ আপিল বিভাগের সদস্যের বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।

বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও বকেয়া শোধ করতে না পারায় সিটিসেলের তরঙ্গ কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে গত ১৭ অগাস্ট সিটিসেলকে নোটিস দিয়েছিল বিটিআরসি। জবাব দেওয়ার জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছিল নোটিসে। গত ২২ অগাস্ট সিটিসেলের এক আবেদনে ওই সময় পর্যন্ত সিটিসেলকে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে বলেছিল হাই কোর্ট। 

বিটিআরসি হাই কোর্টের ওই নির্দেশনার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ায় তার নিষ্পত্তি করে দিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের এই নতুন নির্দেশনা এল।

আদালতে সিটিসেলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

পরে রেজা-ই-রাকিব সাংবাদিকদের বলেন, হাই কোর্টের আদেশ সংশোধন করে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে আপিল বিভাগ আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছে।

“১৭ অগাস্টের আগ পর্যন্ত সিটিসেলের কাছে বিটিআরসির পাওনা রয়েছে ৪৭৭ কোটি টাকা। এর দুই তৃতীয়াংশ এখন থেকে এক মাসের মধ্যে, আর এক তৃতীয়াংশ পরবর্তী এক মাসে পরিশোধ করতে হবে।”

তাছাড়া ১৭ অগাস্টের পর থেকে প্রতিদিন বিটিআরসি আরও ১৮ লাখ টাকা করে পাওনা হচ্ছে। প্রতিদিনের এই টাকা অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছে, টাকা না পেলে বিটিআরসি যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে।

এক প্রশ্নের জবাবে রেজা-ই-রাকিব বলেন, “এই টাকা পরিশোধ করলে সিটিসেল কার্যক্রম চালাতে পারবে। তা না হলে বিটিআরসিকে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আপিল বিভাগ।”

দেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা কমতে কমতে এখন দুই লাখের চেয়ে কম। টু-জি তরঙ্গ ফি, বার্ষিক লাইসেন্স ফি, বার্ষিক তরঙ্গ ফি, রেভিনিউ শেয়ারিংসহ বিভিন্ন খাতে তাদের কাছে সরকারের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

নানাভাবে চেষ্টা করেও পাওনা আদায় করতে না পেরে গত ১৬ অগাস্ট সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ নেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

এদিকে সরকারের পাওনা পরিশোধ করতে একটি বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার কথা জানিয়ে সিটিসেলের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স তাসলিম আহমেদ গত ১৭ অগাস্ট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এর মাধ্যমে বকেয়াসহ অন্যান্য বিষয়ের সমাধান করত পারবেন বলে আশা করছেন তারা।