বিচারেও ‘ভিডিও কনফারেন্স’

বিচার কাজে গতি আনতে এবং যে সব আসামিদের আদালতে হাজির করায় ঝুঁকি রয়েছে, তা এড়াতে ‘ভিডিও কনফারেন্স’ চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2016, 05:52 PM
Updated : 28 August 2016, 05:52 PM

রূপকল্প-২০২১ এর অংশ হিসাবে বিচার বিভাগকে ডিজিটাইজড করতে রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এটুআই প্রোগ্রামের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের এক সমঝোতা স্মারক স্বারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

পুলিশকে উদ্ধৃত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন মামলায় এক জেলা থেকে আরেক জেলায় নিতে তাদের খুবই অসুবিধা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীকে জেল থেকে আদালতে নেওয়ার সময় মাঝপথে সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

“এগুলো অতিক্রম করতে আমরা ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করতে চাচ্ছি। এই রকম যারা আছে, তাদেরকে সরাসরি কোর্টে হাজির না করে, আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের বিচার কাজ চালাব।”

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের খুঁটিনাটি বুঝতে সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তাদের নিয়ে সম্প্রতি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার দেখে আসার কথাও জানান বিচারপতি সিনহা।

“আমরা নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারেও যেতে চেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর অফিসে যত কার্যক্রম হচ্ছে, সেখান থেকে যদি একটু হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সন্ত্রাসীদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা, এক জেলা থেকে আরেক জেলায় নেওয়া এবং জেল থেকে কোর্টে নেওয়া আমরা মিনিমাইজ করতে পারব। এতে বিচার খুব ত্বরান্বিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শত বছর পুরনো আইন ও গতানুগতিক পদ্ধতিতে কাজ চলায় আদালতে ৩০ লক্ষাধিক মামলা জটের কথা বলেন বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ ব‌্যক্তি এস কে সিনহা।

মাত্র ১৬০০ বিচারক নিয়ে দ্রুত মানসম্মত সেবা দেওয়ার দুষ্কর দিকটি তুলে ধরে তিনি বলেন, বিচার বিভাগে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই। তথ্য প্রযুক্তির সর্বশেষ সুবিধাগুলো ব্যবহার করে নাগরিকদের কাছে তাদের পছন্দের ডিভাইসে মামলার তথ্য পাঠানোর কাজটিও নিশ্চিত করা কঠিন কাজ হবে না।

তবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাজেটের অপ্রতুলতার কথাও বলেন প্রধান বিচারপতি।

“তারপরও আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাতে পারি যে, সুপ্রিম কোর্ট ও অধস্তন আদালতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার মানবৃদ্ধি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। মানুষ এখন তাদের মামলার তথ্য ইন্টারনেট, মোবাইল অ্যাপ ও এসএমএসের মাধ্যমে লাভ করতে পারছে।”

তথ‌্য প্রযুক্তি ব‌্যব্হার করে বিচার ব্যবস্থার আধুনিকায়নের নানা উদ‌্যোগের কথা জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সুপ্রিম কোর্ট একটি ওয়েব পোর্টাল তৈরি করেছে। এ ওয়েব পোর্টাল দ্বারা সুপ্রিম কোর্টের কজ লিস্ট এবং জামিন প্রাপ্তি যাচাই বিষয়ক সফটওয়্যার পরিচালিত হচ্ছে।

“কিন্তু জেলা আদালতসমূহের জন্য আমাদের দেশে কোনো ওয়েব পোর্টাল নেই। ফলে সাধারণ নাগরিকগণ সহজে বিচার বিভাগ সম্পর্কিত তথ্যাদি পায় না।”

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি বিচার বিভাগীয় বাতায়ন তৈরির পরিকল্পনাও জানান প্রধান বিচারপতি।

তার উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের পরিচালক কবির বিন আনোয়ার সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার হোসনেয়ার আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদও বক্তব‌্য রাখেন।