খালেদার বক্তব‌্যে জঙ্গিদের প্রশ্রয়: পুলিশ

অভিযানে জঙ্গিদের হত‌্যা নিয়ে খালেদা জিয়ার প্রশ্ন তোলায় ‘দুরভিসন্ধি’ দেখছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2016, 05:24 PM
Updated : 28 August 2016, 05:56 PM

নারায়ণগঞ্জে অভিযান নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব‌্য নিয়ে রোববার পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) একযোগে বিবৃতি দিয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় বাহিনী পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা সরকারি দলের নেতাদের ভাষায় কথা বলছেন বলে বিএনপির সমালোচনার মধ্যেই এই প্রতিক্রিয়া এল।

নারায়ণগঞ্জে শনিবারের অভিযানে গুলশান হামলার ‘হোতা’ তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ তিনজন নিহত হওয়ার পর খালেদা বলেছিলেন, জীবিত ধরলে ‘সত‌্যিকারের তথ‌্য’ বেরিয়ে আসত বলে জঙ্গিদের মেরে ফেলা হচ্ছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছেন, জঙ্গিদের ‘মদদ’ দিচ্ছেন বলেই তাদের প্রতি খালেদার ‘দরদ’ প্রকাশিত হচ্ছে।  

পুলিশ সদর দপ্তর এবং ডিএমপির বিবৃতি আলাদা হলেও ভাষা মোটামুটি একই- খালেদা জিয়া প্রকারান্তরে জঙ্গিদের উৎসাহিত করছেন।

এই অনুষ্ঠানেই খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জঙ্গিদের জীবিত না ধরে মেরে ফেলা হচ্ছে

পুলিশ সদর দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের অভিযানকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ‘সাজানো নাটক’ বলা ‘উদ্দেশ্যমূলক, দুঃখজনক এবং অনভিপ্রেত’।

“তার এধরনের বক্তব্য জঙ্গিরা উৎসাহিত হতে পারে। কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে এ ধরনের বক্তব্য অপ্রত্যাশিত।”

ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের মতো দায়িত্বশীল একজন নাগরিকের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য শুধু পুলিশকেই নয় বরং সমগ্র জাতিকে হতাশ করেছে।

“যেখানে নিহত জঙ্গিদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন তাদের লাশ গ্রহণে অসম্মতি জ্ঞাপন করছেন সেখানে এমন শতভাগ সফল অভিযান সম্পর্কে মনগড়া, বানোয়াট তথ্য প্রদান করে অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা জঙ্গিদের কার্যক্রমকে সহায়তা তথা আশ্রয়-প্রশ্রয়ের শামিল। বিএনপি চেয়ারপারসনের এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ, দুরভিসন্ধিমূলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।”

খালেদা জিয়ার সন্দেহ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ ও কল‌্যাণপুরের অভিযানের বর্ণনা তুলে ধরা হয় বিবৃতিতে।

নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি আস্তানায় লাশের পাশে চাপাতি

এতে বলা হয়, তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানোর সময় প্রথমে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের জন্য সময় দেওয়া হয়। তারা তা না করে পুলিশকে ‘মুরতাদ, জাহান্নামী’ বলে গ্রেনেড হামলা চালানোর পর পুলিশ ‘বাধ‌্য’ হয়ে অভিযান পরিচালনা করে।

কল‌্যাণপুরে একজনকে জীবিত আটকের বিষয়টি তুলে ধরে ডিএমপি বলেছে, “যে কোনো ঘটনায় পুলিশের উদ্দেশ্য থাকে সব আসামিকেই জীবিত গ্রেপ্তার করা।

“অত্র ঘটনায় পুলিশ জান-মাল রক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের প্রতি গুলি ছুড়েছে যাতে নয় জন সন্ত্রাসী নিহত ও একজনকে জীবিত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদি ঘটনা সাজানো হত, তাহলে রিগ্যানকে জীবিত রাখা হত না।”

অভিযানে উদ্ধার আলামতে (অডিও, ভিডিও, স্থিরচিত্র) নিহতদের জঙ্গি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে জড়িত থাকার ‘অকাট্য প্রমাণ’ মেলার কথাও বিবৃতিতে বলা হয়।

গুলশান, কল্যাণপুর ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি অভিযানই ‘দিনের আলোতে’ সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “এসব অভিযানের কার্যক্রম স্থানীয় জনগণ সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছে। জনগণ পুলিশকে সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছে।”