রিশার খুনিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি

ঢাকার কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার খুনিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তার সহপাঠিরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2016, 02:58 PM
Updated : 28 August 2016, 06:51 PM

রোববার সকালে স্কুল ফটকের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

গত বুধবার দুপুরে স্কুল থেকে বেরিয়ে ওভারব্রিজ দিয়ে পার হওয়ার সময় এক যুবক রিশার পেটে ও হাতে ছুরি মেরে পালিয়ে যায়।

তিন দিন মৃত‌্যুর সঙ্গে লড়ে রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রিশা।

রিশার মা তানিয়া বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয় বলে রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান জানান।

১৪ বছর বয়সী রিশা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ‘বি’ শাখায় পড়তেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সহপাঠী সিমি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সেদিন তাদের বাংলা মডেল টেস্ট পরীক্ষা ছিল। বেশিরভাগ সহপাঠী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে গিয়েছিল। রিশা তার ভ্যানগাড়ির জন্য স্কুলেই অপেক্ষা করছিল। ওই ভ‌্যানে উঠতে ওভারব্রিজে পার হচ্ছিল সে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সিমি বলেন, “রিশা আমাদের সঙ্গে বের হলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না।”

সিমির পাশে দাঁড়ানো এক নারী অভিভাবক বলেন, “স্কুলের এত কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটল!”

তিনি এক নিরাপত্তাকর্মীকে বলেন, “আপনারা কী করেছেন?”

এ সময় নিরাপত্তাকর্মী মোশারফ বলেন, স্কুলে প্রায় সব শিক্ষার্থী না থাকায় প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। ফটকের ভেতরে ছিল নিরাপত্তাকর্মীরা।

“ব্রিজের উপর চিৎকার শুনে আমরা দৌড়ে যাই। কিন্তু ছুরি হাতে যুবকটি পালিয়ে যায়।”

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসেন তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বিদ‌্যালয় অঙ্গনে নিরাপত্তা থাকলেও ঘটনাটি স্কুলের বাইরে ঘটেছিল। তবে সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যায় এবং রিশাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

খুনিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় স্কুলে শোকসভা হবে।

দুপুরে স্কুলে ক্যাম্পাসে রিশার মৃতদেহ আনা হলে সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তার মৃতদেহ পুরান ঢাকার বংশালের সিদ্দিকবাজার বাসায় নেওয়া হয়।

রিশার মামা মুন্না বলেন, রিশাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।

তিন ভাই, তিন বোনের মধ্যে রিশা চতুর্থ ছিল। তার বাবা রমজান হোসেন কেবল অপারেটের।

রিশার মা তানিয়া বেগমের বরাত দিয়ে রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, কয়েক মাস আগে ইস্টার্ন মল্লিকার বৈশাখী টেইলার্সে একটি জামা বানাতে দিয়েছিলেন তিনি। যোগাযোগের জন‌্য সেখানে তিনি নিজের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন।

“ওবায়েদ নামে ওই দোকানের এক কর্মচারী ফোন করে রিশাকে বিরক্ত করছিল। এ কারণে রিশার মা ওই মোবাইল সিমটি বন্ধ করে দেন। তার ধারণা, ওবায়েদই রিশাকে ছুরি মেরেছে।”

পরে ওই টেইলার্সে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওবায়েদ দুই মাস আগে চাকরি ছেড়ে সেখান থেকে চলে গেছেন।

উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জানান, রিশার মা বুধবারই ওবায়েদকে আসামি করে রমনা থানায় একটি মামলা করেছেন।

পুলিশ বৈশাখী টেইলার্সের চার কর্মচারীকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও ওবায়েদকে এখনও আটক করা যায়নি বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

ওবায়েদের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার বাড়ি দুই জায়গায় শোনা যাচ্ছে। ঠাকুরগাঁও, না দিনাজপুর তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।