নিউ ইয়র্কের নর্থ শোর বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে কবিপত্নী নীরা কাদরী জানিয়েছেন।
কবির বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। উচ্চ রক্তচাপ ও জ্বর নিয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সাত দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
কবির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তার মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনার নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন।
শহীদ কাদরীর ইচ্ছায়ই তার মরদেহ বাংলাদেশে নেওয়া হবে বলে তার স্ত্রী নীরা জানান।
“আগের দিন উনি বলেছিলেন, আমি বাংলাদেশে যেতে চাই,” কবির মৃত্যুর পর হাসপাতালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন তিনি।
২১ অগাস্ট অচেতন অবস্থায় শহীদ কাদরীকে হাসপাতালে ভর্তি করার চারদিন পর বুধবার তার জ্ঞান ফেরে। সে সময় স্ত্রী ও অন্যদের সঙ্গে কথা বললেও তা ছিল অসংলগ্ন।
শুরু থেকে আইসিইউতে ছিলেন শহীদ কাদরী। ভোররাতে ঘুমের মধ্যেই তার মৃত্যু হয় বলে নীরা জানান।
কবির প্রথম স্ত্রী নাজমুন্নেসা পিয়ারি থাকেন জার্মানিতে। দ্বিতীয় স্ত্রী ডানা ইসলাম মারা গেছেন। তৃতীয় স্ত্রী নীরা কাদরী ছিলেন কবির নিত্য সঙ্গী। মৃত্যুর সময়েও তিনি তার পাশেই ছিলেন।
হাসপাতালে নীরার সঙ্গে কবির একমাত্র ছেলে আদনান কাদরী রয়েছেন।
পঞ্চাশ উত্তর বাংলা কবিতায় আধুনিক মনন ও জীবনবোধ সৃষ্টিতে যে কজন কবি উল্লেখযোগ্য তাদের মধ্য অন্যতম শহীদ কাদরী।
আধুনিক নাগরিক জীবনের সুখ-দুঃখ, প্রেম, স্বদেশচেতনার পাশাপাশি বিশ্ব-নাগরিক বোধের সম্মিলন ঘটে তার কবিতায়।
‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোন ক্রন্দন নেই’ ও ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ এই চারটি কাব্যগ্রন্থ দিয়েই বাংলার জনপ্রিয় কবিদের একজন শহীদ কাদরী। ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি ও ২০১১ সালে তাকে একুশে পদক দেওয়া হয়।
১৯৪২ সালের ১৪ অগাস্ট কলকাতায় জম্ম নেওয়া শহীদ কাদরী সাতচল্লিশে দেশভাগের পর বাংলাদেশে আসেন।
১৯৭৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশের বাইরে তিনি। জার্মানি, ইংল্যান্ড হয়ে ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন তিনি।