শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির কবরে এই শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব চলে।
সকাল ৭টায় কবি পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কবির নাতনি খিলখিল কাজী।
এরপর একে একে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী লীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের ব্যানারে কবির মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলাভবন প্রাঙ্গণে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সকালে জমায়েত হন।
সেখান থেকে তারা সকাল সোয়া ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা সহকারে কবির মাজারে গিয়ে পুষ্প অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করেন।
পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় নজরুল গবেষক ও এমিরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দীন, বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন।
কবি নজরুলের আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জাতিকে নজরুল চর্চা ও অধ্যয়নের আহ্বান জানান অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি বলেন, ”কবি নজরুলের মানবতাবাদী চেতনা, সাম্য ও মুক্তবুদ্ধির ধারণায় নতুন প্রজন্মকে এর তাৎপর্য সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। নজরুল মানুষে-মানুষে ধর্মাধর্মে কোনো ভেদাভেদ দেখেননি।
উপাচার্য বলেন, “নজরুলের দর্শন একীভূত করে, নজরুলকে স্মরণ অনুসরণের মাধ্যমে শিক্ষায়, সংস্কৃতিতে, সমাজ ও প্রতিষ্ঠানে সকলের মাঝে সৃষ্টি করতে হবে নজরুল চেতনার জাগরণ।
ধর্মকে ব্যবহার করে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতাকারীরা প্ররোচনা ও প্রণোদনা দিয়ে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এতে জড়িয়ে পড়ছে। তাই আজ শুধুমাত্র পরীক্ষা পাসের জন্য নজরুল পাঠ নয়- নজরুল চর্চা করতে হবে মূল্যবোধ আর দেশপ্রেমকে উজ্জীবিত করার জন্য।”
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবিকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে নজরুলকে আমাদের চিরদিনের সম্পদে পরিণত করে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক আরেফিন।
বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র (২৯ আগস্ট ১৯৭৬) ঢাকার পিজি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।