রামপাল নিয়ে বিজ্ঞাপনী প্রচারে প্রভাবিত প্রধানমন্ত্রী: তেল-গ্যাস কমিটি

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘অনেক ভুল তথ্য ও অতিরঞ্জন’ রয়েছে দাবি করে আনু  মুহাম্মদ বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর ‘প্রভাবিত হওয়ার’ প্রমাণ পেয়েছেন তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2016, 03:12 PM
Updated : 27 August 2016, 03:12 PM

সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ।

বিষয়টি নিয়ে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির অভিযোগ করেছেন তিনি।

আনু মুহাম্মদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রামপাল বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন জানার পর থেকে মানুষের মনে একটু আশার সঞ্চার হয়েছিল যে, হয়তো প্রধানমন্ত্রী স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য এবং দেশজোড়া জনমত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন।   

“কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোম্পানির বিজ্ঞাপনী প্রচার দ্বারা প্রভাবিত। সে কারণে তার বক্তব্যে অনেক ভুল তথ্য, অতিরঞ্জন আছে। এমনকি আমরা গত ২৮ জুলাই ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলাচিঠি’-তে যেসব প্রচারণা খণ্ডন করেছি, প্রধানমন্ত্রী আবারও সেগুলোই উচ্চারণ করেছেন।”

শুরু থেকে বাম দলগুলো তাদের এই আন্দোলনে সক্রিয় থাকলেও সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া।

গত ২৪ অগাস্ট সংবাদ সম্মেলন করে সুন্দরবনের নিকটবর্তী এলাকা থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান তিনি।পরদিন প্রকল্প বাতিল দাবিতে জাতীয় কমিটির কর্মসূচিতে সমর্থন দেয় বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই এ প্রসঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “অবশেষে থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে। এতদিন অন্তরালে থেকে ইন্ধন জোগালেও ওই দিন বিএনপি চেয়ারপারসন প্রেস কনফারেন্স করে এই অপপ্রচারে প্রকাশ্যে শামিল হয়েছেন।”

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য নাকচ করে আনু মুহাম্মদ বলছেন, তাদের এই আন্দোলন জনগণের ‘গায়ে গতরে গড়ে তোলা আন্দোলন’।

“একদিকে বিএনপি নেত্রী সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে সুন্দরবন আন্দোলনের বিষয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন, অন্যদিকে তার বক্তব্যের সুযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনকে কালি মাখানোর চেষ্টা করেছেন।”

রামপালবিরোধী আন্দোলন ‘বৈজ্ঞানিক তথ্য বিশ্লেষণ’ এবং ‘সামাজিক দায়বোধ থেকে স্বাধীন ও স্বতঃস্ফুর্ত’ আন্দোলন দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা এখনো আশা করি, এই আন্দোলনকে কলঙ্কিত না করে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতি দায়বোধ থেকে জনগণের স্বার্থ বুঝতে চেষ্টা করে মানুষ ও প্রকৃতি বিধ্বংসী প্রকল্প বাতিল করবেন।”

এ বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরতে ২৯ অগাস্ট সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন জাতীয় কমিটির এই নেতা।