‘এনকাউন্টারের’ সমালোচকদের দেশপ্রেম নিয়ে আইজিপির প্রশ্ন

কল‌্যাণপুরে ‘তাজ মঞ্জিলে’ অভিযানে জঙ্গি হতাহতের ঘটনার সমালোচনাকারীদের দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পুলিশ প্রধান শহিদুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2016, 02:31 PM
Updated : 26 August 2016, 02:57 PM

শুক্রবার মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে তিনি বলেন, “আমরা কি চাই? বাংলাদেশ পাকিস্তান হোক? চাই না বিধায় আমরা সচেতন হয়েছি, রুখে দাঁড়িয়েছি। তারপর একটি মহল পুলিশের কর্মকাণ্ডকে বিতর্কতি করছে বক্তব‌্যের মাধ্যমে, আলোচনার মাধ্যমে, ইউটিউব-ফেইসবুকের মাধ্যমে। নানাভবে দেশের কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত করছে।

“এই জঙ্গিদের আদর করবো? ওর কাছে গেলেতো গুলি করবে। গ্রেনেড মেরে আমাদের মেরে ফেলবে। সেখানে যদি যুদ্ধ হয়, এনকাউন্টার হয়, মারা যায়। এখানে যদি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন, আপনার মধ্যে দেশ প্রেম আছে?”

পুলিশের কর্মকাণ্ডের সমালোচনাকারীদের ‘জঙ্গি সমর্থক’ বলেও মন্তব‌্য করেন শহিদুল হক।

তিনি বলেন, “নেপথ্যে আপনি (সমালোচনাকারীরা) সন্ত্রাসী জঙ্গিদের সমর্থন করছেন। এরা জঙ্গিদের সার্পোট করে। এরা চায় জঙ্গিরা অপতৎপরতা করুক, সরকার বিপাকে থাক।”

গত ২৫ জুলাই ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামে পরিচিত ছয়তলা ওই ভবনে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আস্তানায় রাতভর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলে। পরদিন ভোরে সোয়াট সদস্যদের বিশেষ অভিযানে নিহত হন সন্দেহভাজন নয় জঙ্গি। পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করা হয় হাসান নামে আরেক জঙ্গিকে। 

কল্যাণপুরের ঘটনা টেনে শহিদুল হক বলেন, “পুলিশতো ভোর ৫টার দিকে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু এর আগে প্রায় ৪ ঘণ্টা তারা (জঙ্গিরা) বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছে। পুলিশকে হত্যার চেষ্টা করেছে। পুলিশকে মুরতাদ বলেছে, পুলিশকে হত্যা করবে বলেছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সারেন্ডার করবে, তা তো তারা প্রদর্শন করেনি।”

এনকাউন্টারের সমালোচনাকারীদের ‘শুভ বুদ্ধির’ উদয় হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।

সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, কল্যাণপুরে বেঁচে যাওয়া জঙ্গি হাসান অনেক তথ‌্য দিচ্ছে। পুলিশও ভাল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছে।

তিনি বলেন, “কল্যাণপুরের জঙ্গিদের নানা ধরনের প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় তারা কিছু করতে পারেনি।”

‘সারা দেশে ঘরছাড়া শতাধিক জঙ্গি ফিরে আসতে শুরু করেছে’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ইতোমধ্যে যশোরে দুইজন আত্মসমর্পণ করেছে। বাকিদের কেউ কেউ ঘরে ফিরে আসছে। আমরা অনেককে চিহ্নিত করেছি; কারা অর্থ দিচ্ছে, কারা নেতৃত্ব দিচ্ছে।”

একই সমাবেশে তথ‌্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি বলেন, “অভিভাবকদের দায়িত্ব আছে সন্তানের গতিবিধি, শিক্ষকদের দায়িত্ব স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীর দৃষ্টি দেওয়া, আর মহল্লাবাসীর মানুষের দায়িত্ব সমাজের সকলের গতিবিধি লক্ষ্য করে পুলিশকে সহযোগিতা করা।”

নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তথন একটি কুচক্রি মহল এটা করছে। ৭১ সালেও তাদের অপতৎপরতা দেখেছি। জনগণ সঙ্গে থাকলে এই চক্রের অপতৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব।

সভায় অন‌্যদের মধ‌্যে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি রহমত উল্লাহ এমপি, সাধারণ সম্পাদক মো. সাদেক খান ও ১৪ আসনের সংসদ সদস্য আসলামুল হক উপস্থিত ছিলেন।
ওই আসনের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জেন ও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।