যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর নিয়ে চিন্তার কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল

সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় অবস্থিত পুরাতন হাই কোর্ট ভবন থেকে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরলেও তাতে বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2016, 08:56 AM
Updated : 24 August 2016, 09:02 AM

বুধবার নিজ দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নাই। বিচার প্রক্রিয়ায় এটার কোনো প্রভাব বিস্তার করবে না।”

একদিন আগেই পুরনো হাই কোর্ট ভবন থেকে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য স্থাপিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরিয়ে নিতে আইন মন্ত্রণালয়কে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দেওয়ার চিঠির বিষয়টি প্রকাশ পায়।

একটি রায়ের মাধ্যমে সড়ক ভবন পাওয়ার পরও ‘পরিত্যক্ত পুরাতন হাই কোর্ট ভবন’ কেন দরকার- এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, “যুদ্ধাপরাধ মামলায় কত দিনে রিভিউ দায়ের হয়েছে, নিষ্পত্তি হয়েছে, এটার জন্য আমি আপিল বিভাগের রেকর্ড রুমে গিয়েছিলাম, সেখানে গিয়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। মামলার নথি যেভাবে রাখা হয়েছে, সেখানে নড়াচড়া করার জায়গা নাই।”

”আসলে আদালতের প্রচুর জায়গা দরকার। বিচারপতিদের বসার জায়গা নাই, তারা বারান্দাতে বসছেন, রেকর্ড যেভাবে রাখা হচ্ছে, খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতে।”

ভবনটি নির্মাণের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, “সত্যিকার অর্থে এই ভবন যখন করা হয়, তখন পূর্ব পাকিস্তান একটা প্রদেশ ছিল। এখন বাংলাদেশ একটা স্বাধীন রাষ্ট্র, শুধু স্বাধীন রাষ্ট্র না, একটি অগ্রসরগামী দেশ। যে দেশ অন্য দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। বিশেষ করে, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগ ইত্যাদির ব্যাপারে।

“পৃথিবীর অন্য দেশে যেভাবে আন্ডারগ্রাউন্ডে রেকর্ড রুম থাকে, আমাদের সেভাবে চিন্তা করতে হবে। আমার খুব বেশি টেনশন হলো, স্থানের অভাবে এগুলো যেভাবে রাখা হয়েছে বা সুপ্রিম কোর্টের নথিগুলো যেভাবে আছে, সেটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।”

পুরাতন এই ভবন ফিরিয়ে এনে কাজে না লাগিয়ে ঐহিত্য বিবেচনায় সংরক্ষণ করা প্রয়োজন কি না, এমন প্রশ্নে মাহবুবে আলম বলেন, “এই ভবনটা দেখতে খুবই সুন্দর। এটা হয়েছে ১৯০৫ সালে। আমি আমার গ্রামে যেখানে পড়েছি, সেই স্কুলটা হয়েছে ১৯০৫ সালে। কাজেই সময়ের দিক থেকে এই ভবনটা এমন কোনো পুরনো ভবন না।”

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ আরও অনেক ঘটনা বিবেচনায় ভবনটি সংক্ষণ করা দরকার কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “যুদ্ধাপরাধের বিচার করেছেন বিচারকরা। বিল্ডিং করে নাই। সেগুলো সংরক্ষিত হবে রায় দিয়ে। রায়গুলো চিরদিন থাকবে।”

তাহলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংরক্ষণ কেন প্রয়োজন- জানতে চাইলে অ‌্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “সেটা এই জন্য যে, বহুদিন যাবত এটা খোলা ময়দান হিসাবে আছে। ঐতিহাসিক কিছু ঘটনা ঘটেছে এখানে। এই রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের শুরু হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে।”

এ পর্যায়ে সাংবাদিকরা তার কাছে প্রশ্ন রাখেন, তাহলে যেখানে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদদের জাতি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল, সেটাও সংরক্ষণ করা প্রয়োজন কি না।

মাহবুবে আলম বলেন, “এগুলোর বিষয়ে যাই হোক, করা হবে তা সরকার ও জনগণের অভিমতের ভিত্তিতে হবে। এটা কোনো অভিমত দেওয়ার বিষয় না।”