‘বঙ্গবন্ধু শাসনামলের ইতিহাস বিকৃত করেছে পরের সরকারগুলো’

পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসা সরকারগুলো জাতির জনকের শাসনামলের ইতিহাসকে ‘অশুভ উদ্দেশ্যে’ বিকৃত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2016, 04:56 PM
Updated : 9 August 2016, 04:56 PM

মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীতে এক একক বক্তৃতায় তিনি বলেন, “১৯৭২ থেকে ১৯৭৫, বঙ্গবন্ধুর এই শাসনামল নিয়ে সমালোচনা হতো অশুভ উদ্দেশ্যে, মানুষের ঐক্য নষ্টের উদ্দেশ্যে।

“বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে পরবর্তী সরকারের সময়।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল বলেন, “বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর বাংলাদেশে একটি বিভক্ত, সাম্প্রদায়িক ও পাকিস্তান ঘরানার রাষ্ট্র কায়েম হয়েছিল; সেখানে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও আমাদের সংস্কৃতির মূলধারা অনুপস্থিত ছিল।

“সে সময় পাঠ্য বইয়ে ইতিহাস বিকৃত ও পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। প্রচারমাধ্যম তখন বাঙালিত্ববিরোধী প্রচারণায় বাধ্য হয়েছিল। এভাবেই সমালোচিত করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলকে।”

এশিয়াটিক সোসাইটিতে ‘ফেয়ার সিড-টাইম: বাংলাদেশ ইন দ্য ইয়ার্স ১৯৭২-১৯৭৫’ শিরোনামে ‘বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড লেকচার ২০১৫’ শীর্ষক একক বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুর শাসনামল সম্পর্কে এসব কথা বলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু বিরোধীদের বাকশাল ইস্যুতে সমালোচনার প্রেক্ষাপটে তথ্য উপাত্ত ও যুক্তি উপস্থাপন করে অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল বলেন, “বঙ্গবন্ধু সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বললে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে- সে সময়ের রাজনৈতিক সংকট, অর্থনীতি সচল করা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবকাঠামো সংস্কার ও নির্মাণসহ যুদ্ধপরবর্তী দেশ পুনর্গঠন কতটা কঠিন ছিল।”

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ট্রাস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির আহ্বায়ক সাব্বির আহমেদ। সমাপনী বক্তব্য দেন কমিটির চেয়ারপার্সন প্রফেসর খন্দকার বজলুল হক।

এছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক মাহফুজা খানম, অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদ, অধ্যাপক আব্দুল মোমেন চৌধুরী, হান্নামা বেগম, এশিয়াটিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, অধ্যাপক শাহজাহান, অধ্যাপক আবিদ রহমান, অধ্যাপক একেএম গোলাম রাব্বানী উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রতি বছর একটি বিশেষ বক্তৃতার আয়োজন করে। সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের দেওয়া এই বক্তৃতাটি ট্রাস্ট ফান্ডের আয়োজনে দ্বিতীয় বক্তৃতা।

২০১২ সালে ট্রাস্ট ফান্ডের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সময়’ শীর্ষক প্রথম বক্তৃতা দিয়েছিলেন এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। 

জাতীয় অধ্যাপক ডা. নূরুল ইসলাম ২০১২ সালে এশিয়াটিক সোসাইটিতে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেন।