গুলশান হামলা: জেগে উঠলেন ভারত-বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

গুলশান হামলার প্রেক্ষাপটে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার চুক্তিগুলো ‘দ্রুত বাস্তবায়নে’ সম্মত হয়েছেন দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2016, 02:15 PM
Updated : 29 July 2016, 02:15 PM

এসব চুক্তির মধ্যে একটি সন্ত্রাসবাদ ও সংগঠিত অপরাধ ও অবৈধ মাদকপাচার বিরোধী লড়াইয়ের, যা অবিলম্বে কার্যকরে রাজি হয়েছেন তারা।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লিতে বৈঠকে বসে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

এগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তা নিয়ে দুই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ঢাকায় একটি শিক্ষা মেলার উদ্বোধন করে ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সাংবাদিকদের বলেন, “যে কোনো বিষয়ে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা দরকার।”

তিনি বলেন, “আমরা প্রতিবেশী, বন্ধু ও অংশীদার। আজকে আপনাদের যদি কোনো সমস্যা হয় তা আমাদেরও সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। আজকে আমাদের কোনো সমস্যা হলে তা আপনাদেরও সমস্যা হয়ে উঠবে।”

ভারত সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে রাজনাথ সিং ঢাকায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।

সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশকে ভারতের ‘সম্পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা’র বিষয়ে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন, দুই দেশের ‘সব সময় সজাগ থাকতে হবে এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং দুই দেশে শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে’।

বৈঠকে উভয়পক্ষই হামলা পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের কথা তুলে ধরেন, যাতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে এক হওয়ার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি সমাজে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ হওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন তারা।

প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও তথ্য বিনিময়ের একটি কর্মসূচির মাধ্যমে দুই দেশের নিরাপত্তা ও তদন্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে চলমান সহযোগিতা জোরদারে সম্মত হয় উভয়পক্ষ।

২০১৩ সালের দ্বিপক্ষীয় বন্দি প্রত্যর্পন চুক্তি সংশোধনীতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।

দুই দেশের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজ করতে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হন তারা।

সাজা শেষে কারামুক্ত এবং পাচারের শিকারদের প্রত্যাবাসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়েও মতৈক্যে পৌঁছেছে উভয়পক্ষ।

এছাড়া সমুদ্রে আন্তঃদেশীয় অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা তৈরিতে ভারত-বাংলাদেশের ঊপকূলক্ষীদের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক, পাচার ও জাল মুদ্রার বিস্তার প্রতিরোধে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক এবং মানবপাচার বিশেষত নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে সহযোগিতা; উদ্ধার ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক সমঝোতা স্মারক।

সীমান্তরক্ষা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) বাস্তবায়নের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন ভারত-বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।