ঢাকা কারাগার বদলে যা হবে

ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা দুইশ বছরের পুরনো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিনোদনকেন্দ্রে রূপান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

কামাল তালুকদারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2016, 01:42 PM
Updated : 29 July 2016, 05:09 PM

এই কারাগারের ১৮ একর জমিতে করা হবে পার্ক, জাদুঘর, কনভেনশন সেন্টার, উন্মুক্ত নাট্যমঞ্চ ছাড়াও বিনোদনের নানা ব্যবস্থা।

ঐতিহাসিক মূল্য আছে এমন ভবন সংরক্ষণের কথাও ভাবছে কারা কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার ছয় হাজার ৫১১ জন বন্দিকে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে নতুন কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কারা-মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন এ বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “এখানে অনেক কিছুই হবে। ভেতরে দুটি মিউজিয়াম এবং নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। সেই ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষণ করার পাশাপাশি একটি নতুন নকশায় বিনোদনের স্থান তৈরি করা হবে।”

এর বাইরে কনভেনশন সেন্টার, কিছু ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এবং কিছু উন্মুক্ত নাট্যমঞ্চ করা হবে বলেও জানান কারা-মহাপরিদর্শক।

“শিশুদের খেলাধুলার, হাঁটাচলার জন্য খোলামেলা জায়গা থাকবে।”

তিনি বলেন, “এসব বাস্তবায়নে ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট এবং ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সহযোগিতায় আমরা একটি ওপেন কম্পিটিশনে যাচ্ছি; ডিজাইন কম্পিটিশন। ওপেন কম্পিটিশনে যে ডিজাইনটা প্রথমস্থান অধিকার করবে তাদেরকে এই কাজের কনসালটেন্সি করার দায়িত্ব দেওয়া হবে।”

“এরই মধ্যে ডকুমেন্টেশন প্রস্তুত হয়েছে। হয়তো আগামী এক মাসের মধ্যে তা পত্রিকায় চলে যাবে।”

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র নির্বাচনের প্রচারণায় সাঈদ খোকনও পুরান ঢাকাবাসীর জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের স্থানে পার্ক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

পুরো নকশা তৈরিতে তিন মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে অনুমান কারা-মহাপরিদর্শকের।

বন্দি চলে গেলেও কারাগারটি কারা অধিদপ্তরের অধীনে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কারণ নিরাপত্তার সাথে সাথে আরো অনেক বিষয় জড়িত।”

এই কারাগার নিয়ে পরিকল্পনার কথা শুনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন লালবাগ রিয়াজ উদ্দিন রোডের বাসিন্দা রমজান আলী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুবই ভালো হয়েছে। কারণ এখন আর হাঁটার জন্য রমনা পার্কে যেতে হবে না।

“আমি ও আমার স্ত্রী দুজনই ডায়াবেটিস রোগি। সুতরাং এমন একটি খোলা জায়গা পেলে পুরান ঢাকার রোগিদের জন্য খুবই সুবিধা হবে।”

তবে চকবাজারের এক ব্যবসায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার পরিকল্পনা সঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন।

তার যুক্তি, “ডিপার্টমেন্টাল স্টোর হলে আসল উদ্দেশ্য (খোলামেলা) হারিয়ে যেতে পারে। সুতরাং এসব না করলেই ভালো।”