সেবক হিসেবে তৃণমূলে উন্নয়ন ছড়িয়ে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

জনগণের সেবক হিসেবে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2016, 05:30 PM
Updated : 28 July 2016, 05:30 PM

বৃহস্পতিবার রাতে সংসদ ভবনের সংসদ সদস্য ক্লাবে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “একটা কথা সব সময় আপনাদের মনে থাকবে যে, আপনারা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশাসনের কর্মকর্তা। দেশটা আমাদের, দেশের মানুষগুলি আমাদের।

“কাজেই এই মানুষগুলির সার্বিক উন্নয়ন করা, যে উন্নয়ন দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের মাঝে যেন ছড়িয়ে পড়ে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখে জনগণের সেবক হিসেবে সেবা দেবেন। সেটাই কিন্তু আমরা আশা করি।”

তার সরকারের সময় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “২১টা বছর এদেশের মানুষের জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। কাজেই আমরা সময় নষ্ট করতে চাই না।”

আর্থ-সামাজিক উন্নতির পাশাপাশি আধুনিক জগতের সাথে তাল মিলিয়ে, প্রযু্ক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

“প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই যে, আমাদের পদক্ষেপগুলি আপনারা একে একে বাস্তবায়ন করেছেন। সত্যিকারভাবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলায় আপনাদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।”

বাংলাদেশ ‘অল্প সময়ের’ মধ্যে ‘দ্রুত’ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি কর্মচারীদেরও কৃতিত্ব দেন তিনি।

পাকিস্তান আমলে বাঙালিদের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানিদের বিভিন্ন বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে কোনো অবস্থা মোকাবিলা করে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি।”

তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ‘যুদ্ধাপরাধীদের হাতেই দেশের ক্ষমতা চলে যায়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা কখনও চাইবে না- বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াবে, সন্মানজনক অবস্থানে এই বাঙালির স্থান হবে, বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবে।”

২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের জনগণ প্রথম উপলব্ধি করে যে, একটা সরকার মানে জনগণের সেবক। আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম- প্রধানমন্ত্রী নয়, জনগণের সেবক হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করতে এসেছি।”

শেখ হাসিনা তার সরকারের সময় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন কথা উল্লেখ করেন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

গুলশানে জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে আমরা একটা নতুন মাত্রায় নিয়ে এসেছি। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়, ঠিক সে সময় একটা ঘটনা আমাদের একটু থমকে দেয়।”

মাঠ পর্যায়ে কর্মরতদের জঙ্গিবাদবিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই প্রতিটা ছেলে-মেয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে এদেশকে উন্নত করবে, ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে এবং তাদের জীবন সুন্দর হবে।

“জঙ্গির পথ, সন্ত্রাসের পথ তাদের (শিক্ষার্থীদের) পথ না।”

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনপ্রশাসন সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।