বঙ্গবন্ধু পরিষদের কমিটি নিয়ে কৃষি ব্যাংকে সংঘর্ষ, ভাংচুর

বঙ্গবন্ধু পরিষদের পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কৃষি ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2016, 05:22 PM
Updated : 28 July 2016, 05:22 PM

গত ২০ বছর ধরে এই পরিষদের সভাপতি পদে থাকা মো. লিয়াকত হোসেন মোড়ল নবগঠিত একটি কমিটির সভাপতি হিসাবে রয়েছেন। ঢাকা বিভাগের এই মহাব্যবস্থাপকের সঙ্গে কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন সহকারী মহাব্যবস্থাপক আমিনুল বাহার। তিনিও এর আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

দীর্ঘদিন কমিটি পুনর্গঠন না হওয়ার ক্ষোভ থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিবিএ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়।

তবে বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি এই কমিটি অনুমোদন না দিয়ে মঙ্গলবার পুরনো সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পদে রেখে নতুন একটি কমিটি ঘোষণা করে।

বৃহস্পতিবার ব্যাংকের মিরপুরের কার্যালয় থেকে ঢাকা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কমিটির অন্য সদস্যদের নিয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে দেখা করতে মতিঝিলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে বলে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, সাড়ে ১১টার দিকে লিয়াকত মোড়ল ঢোকার পর পর্ষদ সচিবের দায়িত্বে থাকা উপ মহাব্যবস্থাপক আনিসুর রহমানের কক্ষে যান। এ সময় সিবিএ নেতারা মিছিল করে ওইদিকে গেলে তারা দরজা বন্ধ করে দেন। তখন মিছিলকারীরা দরজা ভেঙে ঢুকে কক্ষ ভাংচুর করে।

তিনি বলেন, লিয়াকত মোড়লের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়া অন্য নেতারা এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা সহকারী মহাব্যবস্থাপক আমিনুল বাহারের রুমে যান। অন্য পক্ষের নেতারাও সেখানে যান। সেখানে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।

লিয়াকত মোড়ল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গতকাল আমাদের কৃষি ব্যাংকের কমিটিকে অনুমোদন দেওয়ার পর আমরা চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ফুল দিতে যাই। সেখানে গেলে কিছু লোক এসে আমাদের অনেক সিনিয়র কর্মকর্তাকে অপমান করেছে, বোর্ড সচিবের কক্ষসহ কয়েকটি কক্ষও ভাংচুর করেছে।

“এছাড়া তাদের আক্রমণে আমাদের কর্মকর্তা সুদর্শন আহত হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সচিবের রুম ভাঙার পাশাপাশি আমিনুল বাহারের রুমের গ্লাস ভেঙেছে।”

মাহমুদ হোসেন চৌধুরী, আহমেদ হোসেন, নুরুল আজাদ প্রমুখ এই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। 

এই মাহমুদ হোসেন চৌধুরীই অন্য কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে রয়েছেন। তবে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

এই কমিটির সদস্য কাজী রুহুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যিনি (মোড়ল) নিজেকে সভাপতির পদে ধরে রাখতে চান, তিনি ২০ বছর ধরে ওই পদে রয়েছেন। প্রিন্সিপাল অফিসার থাকা অবস্থায় তিনি এই পদে এসেছিলেন, এখন জিএম হওয়ার পরও সেই পদে আছেন।

“এতদিন কীভাবে থাকলেন? তাছাড়া এই কমিটি হলে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। জিএম পদটা ব্যাংকের নয়। এটা মন্ত্রণালয়ের পদ। তাই তিনি এই কমিটির পদে থাকতে পারেন না। এসব কারণে আমরা নতুন একটি কমিটি করি।”

কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে নিজেদের কমিটির অনুমোদন সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “এটা অনুমোদনের বিষয় নেই। এটা জনপ্রিয়তার বিষয়। সবার মাঝে গ্রহণযোগ্যতার বিষয়। যাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই, তারা টিকবে না।”

এই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাতাব আলী রাশেদী বলেন, “একপক্ষ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলো। অন্যপক্ষ তাতে প্রতিবাদ করেছিল। এটা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে।”