কল্যাণপুরের মামলায় প্রতিবেদন দিতে হবে ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে

ঢাকার কল্যাণপুরে অভিযানের ঘটনায় নিহত ও আহত সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকআদালত প্রতিবেদক ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2016, 01:40 PM
Updated : 25 Sept 2016, 10:01 AM

বুধবার রাতে মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক মো. শাহজাহান আলম বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২), ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৩ ধারায় এই মামলা করেন।

বৃহস্পতিবার মামলার এজাহার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পৌঁছানোর পর মহানগর হাকিম মো. সাজ্জাদুর রহমান পুলিশ প্রতিবেদন দেওয়ার তারিখ ঠিক করে দেন।

কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কে তাজ মঞ্জিল নামের ছয় তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় অভিযানে গিয়ে সোমবার রাতে হামলার মুখে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। পরে মঙ্গলবার ভোরে সেখানে সোয়াটের বিশেষ অভিযানে নিহত হন সন্দেহভাজন নয় জঙ্গি।

ভোরের সেই অভিযানের আগেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার হন মো. রাকিবুল হাসান রিগান নামের এক তরুণ, যাকে পুলিশি পাহারায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওই বাসায় অস্ত্র, বিস্ফোরকের পাশাপাশি আইএস এর পতাকা ও কালো পাঞ্জাবি পাওয়ার কথা জানালেও পুলিশের ধারণা, হতাহতরা সবাই বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গিদল জেএমবির সদস্য।

নিহত নয়জনের মধ্যে আটজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এরা হলেন - দিনাজপুরের আব্দুল্লাহ (২৩), পটুয়াখালীর আবু হাকিম নাইম (২৪), ঢাকার ধানমণ্ডির তাজ-উল-হক রাশিক (২৫), ঢাকার গুলশানের আকিফুজ্জামান খান (২৪), ঢাকার বসুন্ধরার সেজাদ রউফ অর্ক (২৪), সাতক্ষীরার মতিউর রহমান (২৪) এবং নোয়াখালীর জোবায়ের হোসেন (২২) এবং রংপুরের পীরগাছার রায়হান কবির (২০)।

হতাহত দশজন ছাড়াও ইকবাল, তামিম চৌধুরী, রিপন, খালিদ, মামুন, মানিক, জোনায়েদ খান, বাদল, আজাদুল ওরফে কবিরাজের নাম আসামির তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে বলে মিরপুর থানার পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “বাকি ওই নয়জন নিয়মিত সেই বাসায় আসা-যাওয়া করত; ইসলামের নামে উগ্রবাদী কথা বলে তাদের উদ্বুদ্ধ করত। এছাড়া তারা অর্থ যোগান দিত বলেও তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এজাহারে তা লেখা হয়েছে।”

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, কল্যাণপুরে অভিযানের সময় গ্রেপ্তার হওয়া হাসানের কাছ থেকে ‘অনেক তথ্য’ পাওয়া গেছে।

“তামিম চৌধুরী বর্তমানে জেএমবির একাংশের নেতৃত্বদানকারীদের একজন। সে দেশেই আত্মগোপন করে রয়েছে এবং তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

জুলাইয়ের প্রথম দিন গুলশানে জঙ্গি হামলার পর নিখোঁজ দশজনের যে তালিকা কর্তৃপক্ষ দিয়েছিল, তাতে কানাডার পাসপোর্টধারী তামিমের নাম ছিল। পুলিশ তাকে জেএমবি বললেও মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি দল আইএস এর মুখপত্র দাবিকে তামিমকে উল্লেখ করা হয়েছিল বাংলাদেশে তাদের সমন্বয়ক হিসেবে।   

গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, কল্যাণপুরের ওই বাসায় যাদের যাতায়াত ছিল, তাদের নাম পাওয়া গেছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাসানের কাছ থেকে। অধিকাংশের ঠিকনাও সে জানিয়েছে।