সেই ক্যামেরা দর্শনে জার্মানি গেলেন দুই কর্তা

ক্যামেরা দর্শনে তিন কর্তার সফর নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে জার্মানি গেলেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) দুই কর্মকর্তা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2016, 11:20 AM
Updated : 25 July 2016, 11:40 AM

প্রতিনিধিদলে নাম থাকলেও যাননি তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব।

ডিএফপির পরিচালক (প্রশাসন ও প্রকাশনা) মো. শাহেনূর মিয়া সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পিপিআরের অংশ হিসেবে জিনিসগুলো (ক্যামেরা) বুঝে নিতে ডিএফপির দুই কর্মকর্তা জার্মান গেছেন।”

সাত দিনের সফরে জার্মান যাওয়া ডিএফপির কর্মকর্তারা হলেন- অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী খান ও উপ-পরিচালক শিপলু জামান।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মোহাম্মদ নূরুল ইসলামের (প্রেস) ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্যার জার্মান যাননি। তিনি তার মেয়ের বিয়ের জন্য সোমবার থেকে তিন দিনের ছুটিতে আছেন।”

এ বিষয়ে কথা বলতে নূরুল ইসলামের মোবাইলে কয়েক দফা যোগাযোগ করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হওয়ায় নূরুল ইসলাম এই ভ্রমণে যাননি।”

একটি ডিজিটাল ক্যামেরা কিনতে এর আমদানিপূর্ব পরিদর্শনের জন্য ২৫ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন সরকারি কর্মকর্তার ছুটি মঞ্জুর করে গত ১৪ জুলাই আদেশ জারি করে তথ্য মন্ত্রণালয়।

সরকারি তিন কর্তার এই সফরের অনুমোদন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে তীব্র সমালোচনা।

সমালোচনার পর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান কভার করার জন্য একটি ডিজিটাল ক্যামেরা ও সরঞ্জামাদি আনতে যে তিন কর্মকর্তাকে পাঠানো হচ্ছে তদের খরচ দরদাতা প্রতিষ্ঠানই বহন করবে।

ক্যামেরা কেনা সংক্রান্ত সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এস এম মাহবুবুল আলম গত বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে কোনো জিনিস কিনতে ওই জিনিসটি গ্রহণের আগে তা ইন্সপেকশনের বিধান রয়েছে।

“সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এই খরচ বহন করে। এতে সরকারের কোনো অর্থ খরচ হয় না।”

এর আগে লিয়াকত আলী জানিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে শিপমেন্টের আগে তাদের তাতে স্বাক্ষর করতে হবে।

“ডিএফপি অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করছে। তার অংশ হিসেবেই ডিজিটাল সিনেমাটোগ্রাফি আনা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম কভারেজের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা প্রয়োজন। যাতে হাই পাওয়ার লেন্সসহ আরও অনেক আধুনিক উপকরণ থাকবে।”

জার্মান থেকে আনা ক্যামেরার মূল অংশের দাম পড়েছে ৩৫ হাজার ইউরো, যেটি অনুমোদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে কর্মকর্তারা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের প্রতিনিধি ছিল বলে ডিএফপি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ডিএফটি মহাপরিচালক এর আগে বলেছিলেন, “তারা কি প্যাকেট করছে এবং ঠিকমতো দিচ্ছে কিনা সেটাও তো দেখার বিষয় আছে।”

একটি ক্যামেরার জন্য তিন কর্মকর্তার জার্মানি সফর কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএফপি মহাপরিচালক বলেছিলেন, “বাংলাদেশে ওই ধরনের এক্সপার্ট নেই। বরং দুই বছর কাজ করে আমাদের ধারণা সম্পর্কে আমরা আত্মবিশ্বাসী।”

“লাইটিং, পোস্ট এডিটিংসহ নানা বিষয়ে আমরা ধারণা নেব এই সফরে। আগের বছর দুই জনকে পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু তাদের রিপোর্ট আমাকে সন্তুষ্ট করেনি। তাই ভাবলাম এবার নিজেরাই যাব।”