রাজধানীতে উচ্ছেদ অভিযানের শুরুতেই হোঁচট

পুলিশ না পেয়ে গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পূর্ব ঘোষিত উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে পারেনি রাজউক।

ওবায়দুর মাসুমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2016, 11:29 AM
Updated : 24 July 2016, 11:50 AM

আবাসিক এলাকার বিভিন্ন ভবনে অবৈধভাবে গড়ে তোলা রেস্তরাঁসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদে রোববার থেকে একটানা একুশ কার্যদিবস অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেয় রাজউক।

উচ্ছেদের সংবাদ সংগ্রহের আমন্ত্রণ জানিয়ে শনিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও পাঠায় সংস্থাটি।

অভিযানে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় খন্দকার অলিউর রহমান, উত্তরা আবাসিক এলাকায় খন্দকার জাকির হোসেন এবং ধানমণ্ডি এলাকায় মো. নাসির উদ্দিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল।

তবে পুলিশ না পাওয়ায় সে উচ্ছেদ অভিযান শুরুই করতে পারেনি রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।

বেলা দুপুর আড়াইটায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকাল থেকে সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও পুলিশ না আসায় তারা অভিযান শুরু করতে পারেননি।

“আমি ছাড়াও অথরাইজড অফিসার, শ্রমিক এবং উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ সকাল থেকে এখানে অপেক্ষা করছি। পুলিশ এলেই অভিযান শুরু করব। তবে পুলিশ না আসায় এখনো শুরু করতে পারিনি।”

একই কারণে উত্তরা এলাকায়ও উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা যায়নি বলে জানিয়েছেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার জাকির হোসেন।

বেলা পৌনে ৪টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু পুলিশ না আসায় অভিযান শুরু করতে পারিনি। গুলশান হামলার পর বিভিন্ন জায়গায় টহল বাড়ানোয় পুলিশের স্বল্পতা রয়েছে। এ কারণে হয়তো প্রতিদিন পুলিশ পাওয়া যাবে না। তবে দু-একদিন পরপর পাওয়ার আশা করছি।”

তবে গুলশান ও বনানী এলাকার বিপণিবিতানে রোববার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সেখানে সোমবার থেকে অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রাজউকের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার অলিউর রহমান।

রাজউক জানিয়েছে, উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার বরাবর ১৮ জুলাই চিঠি পাঠানো হয়েছিল।

রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) দুলাল কুষ্ণ সাহা স্বাক্ষরিত চিঠিতে, ২৪ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ২১ কার্যদিবস প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১ প্লাটুন সশস্ত্র পুলিশ এবং কিছু সংখ্যক নারী পুলিশ সদস্য মোতায়েনের অনুরোধ জানানো হয়।

এ ব্যাপারে জানতে ধানমণ্ডি ও উত্তরা পূর্ব থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।

ধানমণ্ডি থানার ওসি নূরে আলম বলেন, “আমাদের আছে কেউ পুলিশ চায়নি। আমি রাজউকের উচ্ছেদ অভিযানের ব্যাপারে কিছু জানি না।”

“আমাদেরকে এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানায়নি,” উত্তরা পূর্ব থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক।

গত ১ জুলাই গুলশানে জঙ্গি হামলার পর ঢাকার অভিজাত এই এলাকার অননুমোদিত স্কুল, কলেজ ও হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এরই মধ্যে ২০ জুলাই সারাদেশের শহর এলাকার আবাসিক প্লট ও ভবনে থাকা ১২ হাজার ৯৫৭টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে নোটিস দিয়েছে সরকার।

এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আবাসিক এলাকায় তিন হাজার ১৫, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এক হাজার ১৩৭টি এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) দুই হাজার ৪০০ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।