তদন্তে বিদেশি সহায়তা লাগতে পারে: ডিএমপি কমিশনার

গুলশানে ক্যাফেতে জঙ্গি হামলার মাঠের তদন্তে না হলেও বিদেশি রাষ্ট্রের কারিগরি সহায়তা নেওয়ার পক্ষপাতি ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2016, 11:52 AM
Updated : 31 July 2016, 07:27 PM

বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা এই ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান, ইতালি প্রয়োজনে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছে।

হলি আর্টিজান ক্যাফেতে নিহত ২০ জনের মধ্যে এই চারটি দেশের নাগরিক রয়েছেন। এর মধ্যে জাপানের সাতজন, ইতালির নয়জন, ভারতের একজন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়া একজন বাংলাদেশিও রয়েছেন নিহতদের মধ্যে।  

দেশগুলোর আগ্রহের বিষয়ে পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান শনিবার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্ত করার জন্য বাংলাদেশের চৌকস, প্রতিভাবান পুলিশ কর্মকর্তারা কাজ করছেন। তাদের বিদেশি প্রশিক্ষণ রয়েছে। তারা হাইলি কোয়ালিফাইড।

“কিছু রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য, যেমন ল্যাব পরীক্ষা, এই ধরনের টেকনোলজির আমাদের অভাব  রয়েছে। সেই ধরনের পরীক্ষার জন্য কেমিকেল এক্সামিনের রিপোর্ট যেখানে ভালো হয় অর্থাৎ সিঙ্গাপুর, ভারত বা ইউএসএ, সেখানে আমরা এরই মধ্যে যোগাযোগ করেছি। অর্থাৎ কারিগরি সহায়তার জন্য বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তা গ্রহণ করতে পারি।”

গুলশানে ক্যাফেকে জঙ্গিমুক্ত করতে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টের’ পর ৩২ জন জিম্মিকে বের করে আনা হয় বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

গুলশানে ক্যাফেতে জঙ্গি হামলার এক সপ্তাহের মধ্যে শোলাকিয়ায় ঈদগাহের কাছে হামলার প্রেক্ষাপটে পুলিশের কাজের ধরন বদলানোর উপর জোর দিচ্ছেন  বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান।  

“আমাদের পুলিশ আগে চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী ধরার জন্য কাজ করত। ওয়ে অফ এ্যাকশন, ট্রেনিং, পারসেপশন এক ধরনের ছিল। এখন ট্রেইনিংয়ের প্যাটার্ন, পারসেপশনে চেঞ্জ আনতে হবে।”

“আমাদের ওয়ে অফ অ্যাকশন, মুড অফ অ্যাকশন পরিবর্তন করে ফেলব। এখন যেই ধরনের অপরাধ হচ্ছে তা দমনে ভেতরে ভেতরে কাজ করছি। পুলিশ অফিসার ও তাদের ট্রুপসের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে,” বলেন তিনি।

গত দেড় বছরে লেখক, প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, শিক্ষক, ধর্মযাজক, ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর একের পর এক হামলার পর এক সপ্তাহের ব্যবধানে বড় দুটি জঙ্গি হামলা দেখল বাংলাদেশ।

এসব হামলার বেশিরভাগের দায়িত্ব স্বীকার করে কখনও আল কায়দা কখনওবা আইএসের নামে ইন্টারনেটে বার্তা এলেও পুলিশ তা নাকচ করে বলছে, দেশীয় জঙ্গিরাই এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।

গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলা নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবি চালিয়েছে বলে শনিবারই বলেন পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক।

গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জড়িত থাকার ঘটনা প্রকাশ্য হওয়ার প্রেক্ষাপটে শিগগিরই সারাদেশে শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা আয়োজনের কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।  

আছাদুজ্জামান বলেন, “কোথায় জঙ্গি কার্যক্রমের প্রশিক্ষণ, পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়, মোটিভেশন করা হয় বা শিক্ষার্থীদের কীভাবে ধর্মের খণ্ডিত ব্যাখ্যা দিয়ে, অপব্যাখ্যা দিয়ে তাদের বিপথে পরিচালনা করা হয়, সেটিও নজরদারিতে রাখা হবে।”

জঙ্গিবাদ একটি জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তা প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি এলাকায় ‘সন্ত্রাসবিরোধী সার্ভিলেন্স টিম’ গঠনের কথাও বলেন তিনি।