বিদেশিদের মৃত্যু গুলি ও কোপে: চিকিৎসক

হলি আর্টিজান বেকারিতে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকেই গলা কেটে হত্যার যে খবর বেরিয়েছিল তা নাকচ করেছেন লাশের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক দলের প্রধান।

নিজস্ব প্রতিবেদককামাল হোসেন তালুকদারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2016, 04:16 PM
Updated : 31 July 2016, 07:24 PM

বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, গুলশানের ওই ক্যাফেতে বিদেশিদের বেশিরভাগের মৃতু হয় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে। সাতজনের শরীরে বুলেট পাওয়া গেছে; যাদের মাথায় এবং ঘাড়েও কোপ ছিল।

গত শুক্রবার রাজধানীর কূটনীতিকপাড়া গুলশানের ওই ক্যাফেতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে হানা দেয় একদল তরুণ। হামলার খবর শুনে গিয়ে বোমায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

১২ ঘণ্টা পর শনিবার সকালে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরে পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাতে খবর আসে, হামলাকারীরা ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে।

নিহতদের মধ্যে ইতালির নাগরিক নয়জন, জাপানের সাতজন, ভারতের একজন এবং বাংলাদেশের তিনজন।

অভিযানে ছয় হামলাকারী নিহত এবং একজন জীবিত অবস্থায় ধরা পড়েন বলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। পরে নিহত ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলাও করে পুলিশ।

নিহতদের ময়নাতদন্তকারী তিনজন চিকিৎসকের মধ্যে প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সোহেল মাহমুদ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ঘটনার পর গত রোববার সিএমএইচ হাসপাতালে প্রথম ২০ জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

“নিহতদের মাথায়, ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। কারও কারও গলায় দুয়েকটা কোপের চিহ্ন রয়েছে।”

নিহত বিদেশিদের মধ্যে সাতজনের শরীরে আটটি বুলেট পাওয়ার কথা জানিয়ে সোহেল মাহমুদ বলেন, “তাদেরও মাথায় এবং ঘাড়ে কোপ ছিল।”

তাহলে তাদেরকে জবাই করে হত্যা করা হয়নি- বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ঢাকায় জঙ্গিদের চাপাতির আঘাতে নিহত হওয়ার প্রায় সব ব্লাগার, লেখকের ময়ানতদন্তকারী এই চিকিৎসক বলেন, “না। তাদের মাথায় ও ঘাড়ে কোপ ছিল। দুয়েকজনের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।”

তিনি বলেন, ইতালির এক নাগরিক ও বাংলাদেশি এক নারীর মাথায় আঘাত ছিল। ভারি কিছু দিয়ে আঘাতের কারণে এই দুজনের মৃত্যু হয়।

অভিযানে নিহত ছয় বন্দুকধারীর ময়নাতদন্তও করেছেন এই চিকিৎসক।

তিনি বলেন, এই ছয়জনের প্রত্যেকের শরীরে বুলেটে পাওয়া যায়। তবে তিনজনের শরীরে বোমা বিস্ফোরণের আলামতও মিলেছে।

বুধবার নিহতদের শরীর থেকে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য রক্ত এবং ডিএনএ পরীক্ষা জন্য দাঁত ও রানের মাংস সংগ্রহ করা হয়েছে।

রক্ত ও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহের কারণ জানতে চাইলে সোহেল মাহমুদ বলেন, এই যুবকদের ‘উত্তেজক কিছু খাইয়ে’ ঘটনাটি ঘটানো হয় কি না- তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।