নিহত ৬ জাপানি ছিলেন মেট্রোরেল প্রকল্পের সমীক্ষক: সড়কমন্ত্রী

ঢাকার গুলশানে ক্যাফেতে জঙ্গি হামলায় নিহত সাত জাপানির মধ্যে ছয় জন মেট্রোরেল প্রকল্পের সমীক্ষক ছিলেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2016, 07:54 AM
Updated : 31 July 2016, 07:04 PM

রোববার ঈদ সামনে রেখে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “নিহত ছয় নাগরিক মেট্রোরেল রুট ১ এবং মেট্রোরেল রুট ৫ প্রকল্পের সমীক্ষক হিসেবে কাজ করছিলেন।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ ঘটনায় মেট্রোরেল প্রকল্পে কোনো প্রভাব পড়বে না। গুলশানের হামলা বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের একটি অংশ- এটা জাপান সরকারও জানে।”

পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে রোববার জাইকার প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে পৌঁছেছে বলে জানান সড়ক পরিবহনমন্ত্রী।

নিহত ওই সাত জাপানি ঢাকায় জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা- জাইকার একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করছিলেন, যাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও দুজন নারী।

টোকিওভিত্তিক তিনটি পরামর্শক কোম্পানিতে কর্মরত ওই সাত জন একসঙ্গে ওই রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন বলে জাপান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

জাপানের মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিহিদে সুগার বরাত দিয়ে আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালে নিহতের ছবি ও জিনিসপত্র দেখে ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের শনাক্ত করেছেন।

নিহত ৭ জাপানি

কোইও ওগাসাওয়ারা, কাতাহিরা অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্টারন্যাশনাল

হিরোশি তানাকা, অরিয়েন্টাল কনসালটেন্টস গ্লোবাল

নোবুহিরো কুরোসাকি, অরিয়েন্টাল কনসালটেন্টস গ্লোবাল

হিদেকি হাশিমতো, অরিয়েন্টাল কনসালটেন্টস গ্লোবাল

ওকামুরা মাকোতো, আলমেক করপ.

ইউকো সাকাই, আলমেক করপ.

শিমোদায়রা রুই, আলমেক করপ.

জাইকার অর্থায়নে ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার মেট্রোরেল রুট-৬ প্রকল্পে জাইকা সহায়তা দিচ্ছে ১৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

পাশাপাশি আরও দুটি রেলরুট নির্মাণের প্রস্তুতি শুরুর কথা ইতিমধ্যে জানিয়েছে সরকার। ৪২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রুট-১ হচ্ছে গাজীপুর থেকে ঝিলমিল প্রকল্প পর্যন্ত। মহানগরীর পূর্ব-পশ্চিমে সংযোগ বাড়াতে চূড়ান্ত করা হয়েছে মেট্রোরেল-৫ এর রুট।

গত শুক্রবার রাতে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় একদল অস্ত্রধারী জঙ্গি, জিম্মি হন দেশি বিদেশি অন্তত ৩৩ জন।

প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ওই রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্রবাহিনী। ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ২০ জনের লাশ পাওয়া যায় জবাই করা অবস্থায়।

নিহতদের মধ্যে সাত জাপানি ছাড়া নয়জন ইতালির ও একজন ভারতের নাগরিক রয়েছে। বাকি তিনজন বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে একজনের যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিকত্ব ছিল।

এর আগে রাতে রেস্তোরাঁয় হামলার পরপরই সেখানে আটকেপড়াদের উদ্ধারে গিয়ে হামলাকারীদের বোমা-গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দীন।