আইন কমিশনে খায়রুল হককে পুনর্নিয়োগ

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলার রায় দেওয়া বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে পুনর্নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2016, 01:41 PM
Updated : 30 June 2016, 01:41 PM

সাবেক এই প্রধান বিচারপতি আগামী তিন বছর এই সংস্থায় দায়িত্ব পালন করবেন, যে সংস্থার কাজ বিদ্যমান আইন সংস্কারের বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া।

এর আগে ২০১৩ সালের ২৩ জুন সরকার তিন বছরের জন্য সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে আইন কমিশনের সপ্তম চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরদিন দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার কমিশনের সচিব মো. আলী আকবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আইন মন্ত্রণালয় থেকে চেয়ারম্যানের পুনঃনিয়োগ সংক্রান্ত চিঠি কমিশনে এসে পৌঁছেছে। তিন বছরের জন্য পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে আগের মতই প্রধান বিচারপতির সমান বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন খায়রুল হক।

গুরুত্বপূর্ণ এই সংস্থায় এর আগে দায়িত্ব পালনকারীদের প্রায় সবাই অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। এর মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি এফ কে এম এ মুনেম, বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেন, বিচারপতি মোস্তফা কামাল, বিচারপতি এ টি এম আফজাল প্রমুখ।

বিচারপতি আব্দুর রশীদ ২০১০ সালের অক্টোবরে পদত্যাগ করার পর আইন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. শাহ আলমকে।তিনি ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর বিচারপতি খায়রুল হকের নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে একই বছরের ২৩ জুলাই আইন মন্ত্রণালয় জানায়, যোগ দেওয়ার দিন হতে তার নিয়োগ কার্যকর হবে।আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রধান বিচারপতির সমান বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধা পাবেন।যার মধ্য দিয়ে কমিশন পূর্ণাঙ্গ চেয়ারম্যান পায়।

বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৪ সালের ১৮ মে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানায় জন্ম নেওয়া খায়রুল হক ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন ১৯৬০ সালে। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৭৫ সালে লন্ডনের লিংকনস ইন থেকে বার অ্যাট ল' করেন তিনি।

১৯৭০ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরুর পর ১৯৭৬ সালে হাই কোর্টে এবং ১৯৮২ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন খায়রুল হক।

১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেন তিনি।

খায়রুল হক হাই কোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান ১৯৯৮ সালের ২৭ এপ্রিল। স্থায়ী হন ২০০০ সালের ২৭ এপ্রিল। এরপর ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

হাই কোর্টে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ছাড়াও সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা, স্বাধীনতার ঘোষণা ও ঘোষক সম্পর্কিত মামলা, রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার স্মৃতি সংরক্ষণ, ঢাকার চার প্রধান নদী রক্ষা, ঢাকার ট্যানারি স্থানান্তর এবং আপিল বিভাগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ফতোয়াসহ বিভিন্ন আলোচিত মামলার রায় আসে খায়রুল হকের আদালত থেকে।

জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের প্রধান হিসাবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।