সিম জালিয়াতিতে গ্রেপ্তার এয়ারটেলের ৩ কর্মকর্তা

মোবাইল সিমের নিবন্ধন জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর এয়ারটেলের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2016, 06:42 AM
Updated : 30 June 2016, 03:09 AM

এরা হলেন- এয়ারটেলের ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম, টিএসও মোমিন মিয়া ও মো. ওয়াহিদ।

তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, একটি ছিনতাইয়ের ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে মঙ্গলবার ঢাকার আদাবর-শ্যামলী ও তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনসহ মোট ২২ জনকে আটক করা হয়।

পরে টেলিযোগাযোগ আইনে একটি মামলা করে তাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

বাকি ১৮ জনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জানিয়ে তেঁজগাও বিভাগের উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, “কারও অগোচরে আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে গ্রেপ্তাররা ভিন্ন সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলত। সিমের আসল মালিক জানতই না, তার নামে ভিন্ন আরেকটি সিম রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে।”

বিটিআরসির পরিচালক সুফি মো. মঈন উদ্দিন জানান, অনেক ক্ষেত্রে সিম রেজিস্ট্রেশনের সময় নানা অজুহাতে একাধিকবার সিম মালিকের আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে বলে তারা তথ্য পেয়েছেন। 

গ্রেপ্তারদের কাছে ‘জালিয়াতির মাধ্যমে নিবন্ধিত’ কয়েকশ সিম পাওয়া গেছে বলে বিপ্লব কুমার সরকার জানান।

অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম উচ্চ দামে কিনে ‘একটি চক্র অপরাধ করার পরিকল্পনা করছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশন বাংলাদেশে এই প্রথম। এ পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশনের ফলে অনেক অপরাধ কমে আসবে।”

বিটিআরসি ও পুলিশ প্রশাসন এই ‘অসাধু চক্রের’ বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি।

গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি সিম পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়া চলে। সে অনুযায়ী এখন আর আঙুলের ছাপ না দিয়ে নতুন সিম পাওয়ার কথা নয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ জুন পর্যন্ত মোট ১১ কোটি ৬০ লাখের মত সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র হিসাবে গত এপ্রিল শেষ নাগাদ গ্রাহকের হাতে থাকা মোবাইল সিমের সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ২০ লাখের মত।

এ হিসাবে এখনো দেড় কোটির বেশি সিম নিবন্ধিত না হওয়ায় ঘোষণা অনুযায়ী বন্ধ রয়েছে।

তবে গ্রাহকরা ইচ্ছা করলেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করে সেই সিম তুলতে পারছেন।

এর বাইরেও সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি দোকানে জাতীয় পরিচয়পত্র ও আঙুলের ছাপ ছাড়াই সিম বিক্রির তথ্য পাওয়ার পর অভিযান শুরু করে বিটিআরসি ও পুলিশ।

বিপ্লব বলেন, “জালিয়াতির মাধ্যমে কোনো সিমের যখন রেজিস্ট্রেশন হয়, সেই দায়ভার ওই অপারেটর এড়াতে পারে না। তাদের কোম্পানির কারা কেন এ অপরাধে জড়িত সেটি- তা চিহ্নিত করতে তাদেরও উদ্যোগ নিতে হবে।”